নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ জুলাই ২০২৪
প্রধানমন্ত্রীর সাথে আদালতের টেলিপ্যাথিক সম্পর্ক আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ কোটা আন্দোলন… আপনি(শেখ হাসিনা) না পরিপত্র জারি করেছিলেন যে, কোটা থাকবে না। আবার আদালত থেকে এটা হলো কেনো?”
‘‘ আমাদের কাছে তো মনে হয় যে, আওয়ামী লীগ সরকার, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যেন আদালতের একটা টেলিপ্যাথিক সম্পর্ক। অর্থাৎ শেখ হাসিনা যেটা ভাবেন আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে সেটা চলে আসে… এটাই তো আমরা দেখছি। সরকার যেটা চান সেটা আদালেতের রায়ের মধ্যে দিয়ে চলে আসে। এই টেলিপ্যাথিক সস্পর্কটা হয় কি করে?”
প্রশন রেখে রিজভী বলেন, ‘‘ এতো কোমলমতি ছাত্র রাস্তায় নেমে আসছে, প্রতিদিন তার ক্লাস রুম ছেড়ে দিয়ে সেখানে সে বিক্ষোভ করছে… এটা করবে না। এটা(কোটা সংস্কারের দাবি) কি অন্যায়? এটা কি অন্য্যায্য।”
‘প্রশ্ন-পত্র ফাঁসের ঘটনা’
রিজভী বলেন, ‘‘ আজকে এক এক করে আপনি প্রতিযোগিতা, মেধা, ব্রিলিয়েট স্টুডেন্ট এদের আপনি জাদুঘরে পাঠাচ্ছেন। জাদুঘরে পাঠাচ্ছেন আপনি তাদেরকে যে, ২০০০ বছর পর তার বোনম্যারো টেস্ট করে দেখবে যে, শেখ হাসিনার আমলে ২০০০ বছর আগে মেধাবীরা ব্রিলিয়েন্ট ছাত্ররা ওরা চাকুরি পেতো না, রিকশা চালাতো, সিএনজি চালাতো।এখানে প্রতিযোগিতার কোনো দাম নেই। বাদ বাকি কারা অফিসার হতো, কারা ক্যাডার সার্ভিসে জায়গা পেতো, কারা ডেপুটি সেক্রেটারি, ডিসি হতো যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করার মধ্য দিয়ে সেই প্রশ্ন পেয়ে আপনার পরীক্ষা দিয়ে তারা ক্যাডার সার্ভিসে চান্স পেয়েছেন।”
‘‘ না হলে আমরা যেখানে শুনি, অমুক ডিসি অমুক বিশ্ববিদ্যালয়ের অমুক হলের সাধারণ সম্পাদক ছিলো, অমুক এসপি আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ের…. এতো ছাত্রলীগ জয়েন্ট সেক্রেটারি, ডিসি-এসপি হয় কি করে? এই প্রশ্ন ফাঁসের মধ্য দিয়ে এই সমস্ত কাজগুলো করা হয়েছে।”
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজ শাখার সহসভাপতি আতিকুর রহমান রাসেলের গুম হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। গত ১ জুলাই আজিমপুর এলাকা থেকে রাসেলকে সাদা পোষাকধারী সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়… এরপর থেকে সে নিরুদ্দেশ।
রিজভী বলেন, ‘‘ গুম-খুন ও বিচারবর্হিভূত হত্যার যে বারবারেন-বর্বর সংস্কৃতি তারা তৈরি করেছে। শুধুমাত্র শেখ হাসিনার শ্বেত পাথরের সিংহাসনকে রক্ষা করার জন্য আজকে তিনি গুম-খুনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে সব চাইতে বড় আতঙ্ক শেখ হাসিনার। এই আতঙ্কে থেকে নিজেকে নিরাপদ করার জন্য জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল ও গণতন্ত্রকামী নেতা-কর্মীদের তিনি গুম করাচ্ছে।”
‘‘ আমরা সকলে জানি, আতিকুর রহমান রাসেল আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। একটা টেনসন তৈরি করার জন্য, একটা শঙ্কা তৈরি করার জন্য,একটা উদ্বেগ-উৎকন্ঠা তৈরি করাবার জন্য বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী ছাত্র সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে এরা পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। এই যে, সরকার আবারো পরিকল্পনা মাফিক গুমের মতো মানবতা বিরোধী মনুষ্যত্বহীন এই পদ্ধতির অবলম্বন করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এই মুহুর্তে আতিকুর রহমান রাসেলকে তার পিতার কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় ছাত্র দল আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করবে, সকলে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্র দলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি শাহীনুর রহমান শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক জুলহাস মিয়া এবং গুম হওয়া রাসেলের বাবা আবুল হোসেন সরদারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/ এনজি