জবি প্রতিনিধি
১০ জানুয়ারি ২০২৫
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেরানীগঞ্জের নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর ও অস্থায়ী আবাসনের দাবিতে ‘গণঅনশন’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আগামী রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে এ কর্মসূচি শুরু করবেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গণঅনশনের ব্যানার প্রকাশসহ ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা দেখা গেছে৷ দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না পাওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের জন্য আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে স্পষ্টভাবে বলেছি। এ বিষয়ে পাঠানো চিঠিও আমাদের হাতে আছে। নতুন ক্যাস্পাসের কাজ বাস্তবায়নে জবি প্রশাসন নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। নতুন ক্যাম্পাসের কাজ নিয়ে এ পর্যন্ত যা হয়েছে, তা পূর্বের স্বৈরাচারী আমলের প্রশাসনের কাজের ফলস্বরূপ। অস্থায়ী আবাসনের কাজও চলমান আছে। এ বিষয়ে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেরদৌস শেখ নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন- আমাদের ২০ হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও আবাসন সংকট সমাধান করা। আমরা প্রশাসনকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি; কিন্তু তাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখা যায়নি। এই সরকার থাকাকালীন যদি আমাদের মৌলিক দাবি নতুন ক্যাম্পাস ও আবাসন সংকট সমাধান করতে না পারি আর কখনই তা সম্ভব হবে না। তাই আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য, ২০ হাজার শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
সেনাবাহিনীকে ক্যাম্পাসের কাজ হন্তান্তরের বিষয়ে জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ের পর আমরা আমাদের নতুন প্রশাসনে একটা যৌক্তিক সময় দিয়েছিলাম; কিন্তু এতদিন পার হলেও আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাইনি। পুনরায় তারা আবার চিঠি চালাচালির বিষয়টি দেখাচ্ছে। এজন্য আমরা অনশনের ঘোষণা করেছি। যতদিন না দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের চুক্তি হয় আমরা আমরণ অনশনে থাকব।
সেনাবাহিনীকে ক্যাম্পাসের কাজ হন্তান্তর করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আলোচনা সভায় উপস্থিত আরেক ছাত্র প্রতিনিধি ও ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌসিব মাহমুদ সোহান বলেন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তরের জন্য আমরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম গত ১২ নভেম্বর। দুই মাস পার হলেও আমরা কোনো দৃশ্যমান অগ্রগ্রতি পাইনি। প্রশাসন ও সচিবালয় থেকে আমাদের কোনো অগ্রগতি জানানো হয়নি। এজন্য আমরা অনশনের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরে কোনো বাধা নেই। এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে দুই মাস পার হলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেনাবাহিনীকে প্রকল্পের কাজ হস্তান্তর করতে ইউজিসিকে চিঠি দিয়েছে।
টি আই / এনজি