রাত ৪:৩১ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে সরকার পরিবর্তন ছাড়া কিছুই বদলায়নি : গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ অক্টোবর ২০২৪

 

 

ছাত্র-জনতার গণ অভ্যূত্থানে সরকার পরিবর্তন ছাড়া অন্য কিছুই বদলায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, এক-এগারোর সময়ে আওয়ামী লীগের সকল মামলা যদি উঠে যেতে পারে, তাহলে এখন কেনো আমাদের মামলা উঠছে না। আপনারাই বলেছেন, আমাদের ওপরে মিথ্যা মামলা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে অপমানিত করা হয়েছিলো এতে গোটা জাতি ক্ষুব্ধ হয়েছে। তাহলে আমাদের ওপরে এতো অত্যাচার-নির্যাতন-মিথ্যা মামলা কেনো আপনাদের বিবেচনায় আসছে না।

জাতীয় প্রেসক্লা্বরে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রচার দলের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে ‘দুর্যোগ প্রশমন বিএনপির ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রচার দলের সহসভাপতি রুহুল আমিন।। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিএনপির কর্মকান্ডের ওপরে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।

গয়েশ^র বলেন, আপনাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা) মিথ্যা মামলার ব্যাপারে যদি আমরা সমব্যথিত হতে পারি, সোচ্চার হতে পারি। তাহলে আপনারা দায়িত্ব গ্রহন করার পরে আমাদের মামলাগুলো আগের মতোই আছে, আমাদের আগের মতোই আদালতে যেতে হচ্ছে। এই কারণেই আমি বলেছি, সরকার বদলে গেছে কিন্তু তুমি-আমি একই আছি, যা ছিলাম আগে।

বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, মান্না দে‘র একটি গান, তুমি কি সেই আগের মতোই আছ, নাকি অনেকখানি বদলে গেছ..। গানে শুরুটা এরকম যদি বলি, সরকার বদলিয়ে গেছে, তুমি-আমি একই আছি, আগে যা ছিলাম…। বাংলাদেশের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় নাই। মানুষের অধিকারের জন্যে দীর্ঘ ১৬ বছর যারা রক্ত দিয়েছে, যারা গুম হয়েছে, যারা সন্তান হারা হয়েছে, যারা পিতৃহারা হয়েছে, যারা মা হারা হয়েছে, এরা সব হারিয়েছে। মাঝখানে শেখ হাসিনা নাই। সব আগের মতোই আছে।

গয়েশ্বর বলেন, এখনো নির্বাচন কমিশন পরিবর্তন করতে পারেন নাই। কিন্তু জনগনের ভোট করতে হলে তো নির্বাচন কমিশন লাগবে। যেখানে এখনো উইথআউট নির্বাচন কমিশন সেখানে আমি কিভাবে বিশ্বাস করবো আপনি নির্বাচন করবেন, কিভাবে বিশ্বাস করবো? কমিশনের পর কমিশন, আরেকটা কমিশন হলো রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনা, জাস্ট ইজ এ টাইম কিলিং, নাথিং মোর। নির্বাচন যত শিগগিরই হবে জনগনের পার্টিসিপেশনের জোয়ারের রায়ে মধ্যে হবে। এই মুর্হুতে যদি নির্বাচন হয় তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচনের অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করে জনগন ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হবে। কিন্তু মরা মানুষ উপস্থিত হবে না।

গয়েশ্বর বলেন, আজকে যে আকাংখা কোটা বৈষম্য বিরোধী থেকে শুরু করে জনগনের ভোটাধিকার ফিরে পাবার যে আন্দোলনটা, সেই আন্দোলনে ছাত্রদের সাথে রাজনৈতিক দলের কোনো সাংঘর্ষিক না। একই ধারার আন্দোলন। কিন্তু বর্তমান সরকার তাদেরকে(ছাত্রদের) আলাদা করতে চান কেনো? অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার দায়িত্ব একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যেটুকু রিফর্ম দরকার হয় সেইটুকু রিফর্মের জন্য বিবেচনা করবেন। আর আপনাদের ভাবনাগুলো আর আমাদের ভাবনাগুলো, আমরা তো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি, এসব সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনে জনগনের প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে আসবে, তারা ঐক্যমতের ভিত্তিতে যেসব সংস্কার করবে।
বিএনপির এ নীতি নির্ধারক বলেন, আমরা বলছি, আপনারা যদি ব্যর্থ হন, জাতি ব্যর্থ হবে, আপনারা ব্যর্থ হওয়া মানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল ব্যর্থ হওয়া। আমরা দেখতে চাই আপনারা সফল হন। আমরা আপনাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে, আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবো। তবে স্পষ্ট করেন আপনারা নির্বাচন করবেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচনের জন্য কতটুকু সময় লাগবে বলেন না কেনো? সেনা বাহিনী প্রধান বলেছেন ১৮ মাস, তার কথা বলেছেন বলুক। পরের দিন কেনো সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা সরকারের কথা না। তাহলে সরকারের কথাটা কি? ৩৬ মাস, ৩০ মাস তাই বলেন না, বলতে তো হবে আপনাকে। আপনাকে তো সময় বলতে হবে।

জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের সভাপতি মাহফুজ কবির মুক্তা‘র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মুহাম্মদ নেছারুল হকসহ জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

 

জা ই / এনজি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *