সকাল ৯:৫১ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে গণতন্ত্র নাকি ফ্যাসিবাদের পক্ষে থাকবে : দুদু

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ সেপ্টম্বর ২০২৪

 

 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, গণমানুষের তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন। এখন ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা গণতন্ত্রের স্বপক্ষে থাকবে নাকি ফ্যাসিবাদ- যিনি গণহত্যা চালিয়েছেন, গণতন্ত্র হত্যা করেছেন, স্বাধীনতা বিপন্ন করেছেন- তার পক্ষ নিবে।

আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’-এর উদ্যোগে সীমান্তে হত্যা বন্ধ, ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার দাবিতে এক সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করা হচ্ছে। এটা শুধু আজকে হচ্ছে তা না, দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত আছে। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মানুষ নিরাপত্তা চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশি যেসব নাগরিকদের হত্যা করা হয়, তারা বাংলাদেশের সীমানার মধ্যেই থাকে- কোনো প্রকার সতর্কতা ছাড়া তাদের নির্বিঘ্নে হত্যা করা হচ্ছে। এটি একটি জঘন্যতম অপরাধ। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটা বন্ধ করতে হবে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের সীমান্তে এ রকম বর্বরতা নেই। যেটা আমাদের সাথে আমাদের পাশের রাষ্ট্র, যারা বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেয়, তারা এটা করছে।

তিনি বলেন, সীমাহীন লুটপাট, গণতন্ত্র হত্যা, নির্বিকারে মানুষ হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। গত এক-দেড় বছর ধরে নয়, গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীসহ যারাই অধিকার আদায়ের কথা বলেছে- তাদের হয় গুম করেছে, না হলে হত্যা করেছে, মামলা দিয়েছে। তারা আওয়ামী লীগের (নেতাকর্মী) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এত টাকা সরিয়েছে- বিশ্বে অন্য কোনো রাষ্ট্রে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের এমন নজির নেই। এই টাকাগুলো বিদেশে পাচার করা হয়েছে। পাশের দেশে এবং অন্য দেশে পাচার করা হয়েছে।

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে আমেরিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশ বৈঠক করেছে। কিন্তু আমাদের পাশের দেশ ভারত যারা আমাদের বন্ধু দাবি করে, তারা পালিয়ে এসেছে- ড. ইউনূস সাহেবের সঙ্গে বসেনি। তার মানে তারা গণতন্ত্রের সঙ্গে বসেনি। যে দেশ ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে, ৯০-এ, ২০২৪ সালে গণতন্ত্রের জন্য, দাবি আদায়ের জন্য রক্ত দিতে পারে, তার পক্ষে তারা (ভারত) দাঁড়ায়নি।

অর্থ লুটপাটকারীদের হুঁশিয়ার করে দুদু বলেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থ লুটপাট করে যারা বিদেশে পাচার করেছে- সেই টাকা যেখানেই থাক, সাগরের নিচে অথবা শেখ পরিবারের কাছে কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীর কাছে থাকুক- ভালোয় ভালোয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এ টাকা ফেরত পাঠান। এ টাকা দেশের জনগণের। খেটে খাওয়া মানুষের এই টাকা যতক্ষণ না পর্যন্ত উদ্ধার হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কারো সঙ্গে আপস নেই।

কৃষক দলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, শেখ হাসিনা আন্দোলন করবেন নাকি নির্বাচন করবেন- এটা তার ব্যাপার। তবে বাংলাদেশের মানুষ কখনো হত্যাকারীকে ছাড় দেয়নি। এ দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের কাছে কখনো মাথা নত করেনি। যারা পালিয়ে গেছে, তাদের এটা মনে রাখতে হবে।

তিনি বলেন, আগামী দিন গণতন্ত্রের পক্ষের, স্বাধীনতার পক্ষের মানুষের দিন। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেছেন- আগামী দিনে গণমানুষের ভোটে নির্বাচিত সরকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবে। তারাই বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করবে এবং ১৬ বছরের যে জঞ্জাল তা পরিষ্কার করবে। এটাই বিএনপি, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের লক্ষ্য।

সংগঠনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ১২ দলীয় জোট শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, কৃষক দলের নেতা এসকে সাদি প্রমুখ।

 

জা ই / এনজি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *