সকাল ৯:৫২ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

খান ইউনিসে ২৫৫ ফিলিস্তিনি হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,

৩০ জুলাই ২০২৪

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে গত নয় দিনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযানে কমপক্ষে ২৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস।

মঙ্গলবার টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে মিডিয়া অফিস বলছে, গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটির পূর্ব উপকণ্ঠে নয় দিনের ‘ভয়াবহ গণহত্যাতে’ ২৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া প্রায় ৩০০ জন আহত এবং ৩১ জন নিখোঁজ রয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ৩১টি বাড়িতে বোমাবর্ষণ চালায়, যখন এসব বাড়ির বাসিন্দারা ভেতরেই ছিল। এছাড়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় মোট ৩২০টি বাড়ি এবং আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।

মিডিয়া অফিস আরও বলেছে, ‘আমরা খান ইউনিস গভর্নরেটের পূর্বে বেসামরিক নাগরিক এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের ভয়াবহ গণহত্যার কঠোর ভাষায় নিন্দা জানাই।’ একই সঙ্গে গাজায় ‘গণহত্যা’ বন্ধ করতে ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মিডিয়া অফিস।

গত ২২ জুলাই ইসরায়েলি বাহিনী খান ইউনিসের শহরের কিছু অংশ খালি করার নির্দেশ দেয়। নির্দেশে বলা হয়, যদি শহরের পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের লোকজন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এলাকা ত্যাগ না করেন, তাহলে সেই অবস্থাতেই অভিযান শুরু করবে ইসরায়েলি সেনারা।

এর মধ্যেই বুধবার ইসরায়েলি সৈন্যরা খান ইউনিস শহরে একটি অভিযানের সময় পাঁচ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করে। তাদের মধ্যে একজন বেসামরিক নাগরিক এবং চারজন সেনা সদস্য বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এরপরই ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে ব্যাপক অভিযান শুরু করলে নতুন করে ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএনওসিএইচএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে গত নয় দিনে খান ইউনিস ও আশপাশের এলাকা থেকে তিন লাখ বেশি ফিলিস্তিনি পালিয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

৯ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বর্বরোচিত এ হামলায় ৩৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও ৯০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এছাড়া গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে, যা গত ৭৫ বছরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, গাজার ২৪ লাখ ফিলিস্তিনির বেশিরভাগই অন্তত একবার যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

সূত্র: আলজাজিরা /এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *