রাত ৪:১২ | মঙ্গলবার | ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ৩০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ এভিয়েশনে পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নে অনন্য ইউএস-বাংলা

মতামত

 

মোঃ কামরুল ইসলাম

২৮ এপ্রিল ২০২৫

 

সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা ছাড়া এভিয়েশনে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানো অসম্ভব। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে বাংলাদেশের এভিয়েশনে জ্বল জ্বল করে জ্বলছে দেশের আকাশ পরিবহনের অন্যতম ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে ইউএস-বাংলা পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

লক্ষ্য যত দূরেই থাকুক সঠিক পরিকল্পনা সেই লক্ষ্যকে নিজস্ব দৃষ্টি সীমায় নিয়ে আসাই সঠিক ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য থাকে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই যাত্রা শুরু করার পূর্বে দেশের এভিয়েশনে যাত্রী সেবাকে প্রাধান্য দিয়ে, প্রায় ১৫ মিলিয়ন প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য আধুনিক এয়ারক্রাফট, প্রতিযোগিতামূলক ভাড়া, উন্নত ইন-ফ্লাইট সার্ভিস সহ সকল ধরনের সেবার সম্মিলন ঘটিয়েছে।

যাত্রার শুরুতে পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের সকল বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালানো, যা এক বছরের মধ্যেই বাস্তবায়ন করেছে ইউএস-বাংলা। লক্ষ্য যখন দূর দিগন্তে সেখানে ইউএস-বাংলা থেমে যায়নি। দু’বছরের মধ্যেই ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে গমণ করে।

ধীরে ধীরে ইউএস-বাংলা ইনফ্যান্ট থেকে চাইল্ডে রূপান্তরিত হয়েছে, তখন স্বপ্নগুলো আরো বড় দেখতে শুরু করেছে। তৃতীয় বছরেই বহরে যোগ করেছে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট যার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মাস্কাট, দোহা সহ এশিয়ার অন্যতম গন্তব্য সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এছাড়া যাত্রী চাহিদার উপর ভিত্তি করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতা ও বাংলাদেশী যাত্রী যারা চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য ভারতে গমন করে তার মধ্যে অন্যতম গন্তব্য হচ্ছে চেন্নাই-তে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ইউএস-বাংলা।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশী কোনো এয়ারলাইন্স চীনের কোনো প্রদেশে ফ্লাইট পরিচালনায় প্রথমবারের মতো স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পেরেছে ইউএস-বাংলা। বাংলাদেশী ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, পর্যটক ও চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য চীনের গুয়াংজুতে ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিচালনা করছে যা, বাংলাদেশের এভিয়েশনের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। ধারাবাহিকভাবে ইউএস-বাংলা দেশীয় পর্যটক ও চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির সুবিধা হিসেবে ঢাকা থেকে ব্যাংককে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

কোভিড কালীন সময়ে সকল ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে বিস্তৃত আকাশসীমাকে নিজেদের করে নেয়ার জন্য বাংলাদেশী যাত্রীদের অন্যতম গন্তব্য আরব আমিরাতের দুবাই ও সার্ক এর অন্তর্ভূক্ত মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ইউএস-বাংলা। মালেতে প্রায় দেড় লক্ষাধিক বাংলাদেশীরা অবস্থান করছে। কোভিড পরবর্তীতে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গন্তব্য আরব আমিরাতের শারজাহ, আবুধাবীতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। প্রতিমূহূর্তে বাংলাদেশী যাত্রীদের কাছে ইউএস-বাংলা অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রতিযোগিতামূলক ভাড়ায় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশী যাত্রীরা দেশীয় আতিথেয়তায় ভ্রমণ করতে পারছে ইউএস-বাংলায়।

বাংলাদেশী তথা বিশ্বের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আবেগের জায়গা সৌদি আরবের অত্যন্ত জনপ্রিয় জেদ্দায় ফ্লাইট শুরু করেছে ২০২৪ সালের ১ আগষ্ট। লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কাজের প্রয়োজনে কিংবা ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে ইউএস-বাংলার সেবা গ্রহণ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউএস-বাংলা সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে।

এভিয়েশন ব্যবসায় নিজেকে গুটিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নেই। মুক্ত আকাশে এভিয়েশন ব্যবসাটা সত্যিকার অর্থেই মুক্ত। মুক্ত অর্থনীতিতে একটি এয়ারলাইন্সকে প্রতিনিয়ত নানাবিধ প্রতিযোগিতার সম্মূখীন হয়েই সামনে অগ্রসর হতে হবে। দেশের এভিয়েশনে ইউএস-বাংলা একটি সেরা এয়ারলাইন্স। নিকট ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়াসহ এশিয়ার অন্যতম সেরা এয়ারলাইন্স হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে ইউএস-বাংলা।

বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর বিমান বহরে ৪৩৬ আসনের ২টি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট আছে ৯টি যাদের আসন সংখ্যা ১৮৯। মোট বহরে এয়ারক্রাফট আছে ২৪টি। এয়ারক্রাফট সংখ্যার দিক থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স দেশের সর্ববৃহৎ বিমান সংস্থা। চলতি বছর বহরে আরো দু’টি বৃহৎ আকারের এয়ারক্রাফট যুক্ত করা পরিকল্পনা আছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খুব শীঘ্রই ঢাকা থেকে মদিনা, দাম্মাম, ২০২৬ সালের মধ্যে ইউরোপের গন্তব্য লন্ডন, রোম এবং ২০২৮ সালের মধ্যে ঢাকা থেকে টরেন্টো, নিউইয়র্ক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য কাজ করছে ইউএস-বাংলা।

সর্বপ্রথম ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফট দিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা। বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের এয়ারক্রাফটগুলোর গড় বয়স প্রায় ১০ বছর। ভবিষ্যতে নতুন নতুন রুট, নতুন নতুন এয়ারক্রাফটকে যুক্ত করে এয়ারলাইন্সকে আরো সমৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছে ইউএস-বাংলা।

সুন্দর ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা যেকোন উদ্দেশ্যকে সঠিক বাস্তবায়নের দিকে ধাবিত করে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ এভিয়েশন শিল্পে তেমনি একটি বিমান সংস্থা, যা ভবিষ্যতে সঠিক পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ এভিয়েশন সেক্টরকে আরো সমৃদ্ধি করে গড়ে তুলবে।

 

লেখক : মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *