জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৮ এপ্রিল ২০২৫
টানা নয় কার্যদিবস দরপতনের পর রোববার (২৭ এপ্রিল) দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললেও সোমবার (২৮ এপ্রিল) আবার বড় দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবস এবং তার আগে সপ্তাহে চার কার্যদিবস অর্থাৎ টানা নয় কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বাড়ে মূল্যসূচক। অবশ্য সিএসইতে পতনের ধারা অব্যাহত থাকে।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। লেনদেনের প্রথম আড়াই ঘণ্টা বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টার পর বাজারের চিত্র বদলে যায়। গড়পড়তা ভালোমন্দ সবধরনের কোম্পানির শেয়ার দাম কমতে থাকে। এতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার পাশাপাশি মূল্যসূচক বড় পতন দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৬টির। আর ৫৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫১টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১৩৯টির দাম কমেছে। আর ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৫টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৬১টির দাম কমেছে এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়া বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৬টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ৮টি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ১২টির এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সার্বিকভাবে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৩০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৫৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৩৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১১৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৭৯ টাকার। ১৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাহাজিবাজার পাওয়ার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- শাহিনপুকুর সিরামিকস, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ওরিয়ন ইনফিউশন, লাভেলো আইসক্রিম, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, সোনালী পেপার এবং ব্র্যাক ব্যাংক।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৯টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
টি আই / এনজি