বিকাল ৩:০৪ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঢালাওভাবে মামলা-গ্রেফতার বন্ধের দাবি সুজনের

এনজি প্রতিবেদন
২৬ জুলাই ২০২৪

ঢালাওভাবে মামলা ও গ্রেফতার বন্ধের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। একই সঙ্গে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নির্মোহ তদন্ত ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানিয়েছে সংস্থাটি।

শুক্রবার সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান ও সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়।

 

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার সংস্কারের লক্ষ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জের ধরে সৃষ্ট অচলাবস্থা এখনো নিরসন হয়নি। সহিংতায় মৃত্যুর সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা দু’শ ছাড়িয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া, স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ফলে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে তারা মনে করেন। এতে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসনের ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। কোনো স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে এত প্রাণহানি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রত্যেকটি প্রাণই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কিছুর বিনিময়ে তা পূরণ হবার নয়।’

নিরপেক্ষ ব্যক্তি ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করে প্রত্যেকটি হত্যার নির্মোহ তদন্ত করা এবং দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দাবি জানায় সংস্থাটি। বিবৃতিতে বলা হয়, আন্দোলনের নামে সহিংসতা চালানো এবং সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

 

এতে বলা হয়, তবে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সামর্থ্য ও প্রস্তুতি বাড়ানো দরকার। তবে কিছুটা দেরিতে হলেও আদালতের নির্দেশনা মেনে কোটা পদ্ধতির সংস্কার করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানায় সুজন। একই সঙ্গে আন্দোলনকে ঘিরে যাতে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের আর নতুন করে হয়রানি না করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানায় সংস্থাটি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের উচিত কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ মানুষ কেন এত ক্ষুব্ধ তা উপলব্ধিতে আনার চেষ্টা করা। তাদের আশঙ্কা, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে যে জন-বিস্ফোরণ হয়েছে তা রোগের উপসর্গমাত্র। মূল রোগ হলো ভোটাধিকার থেকে শুরু করে জনগণের অন্যান্য নাগরিক অধিকার না পাওয়ার বঞ্চনা। তাই, স্থায়ীভাবে সংকটের নিরাময় ঘটাতে হলে উপসর্গের নয়, রোগের চিকিৎসা আবশ্যক। এ লক্ষ্যে সব অংশীজনকে, বিশেষ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনতিবিলম্বে সংলাপের আয়োজন এবং গুরুতর সমস্যাগুলোর একটি টেকসই সমাধানে পৌঁছার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে অবিলম্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে এবং তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়ে সব ধরনের অচলাবস্থা নিরসনের দাবি জানায় সুজন।

এছাড়া বিবৃতিতে লেজুড়ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির অবসান ঘটানো এবং তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশে নিয়মিত ছাত্র সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সুজন সভাপতি ও সম্পাদক।

 

জা ই/ এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *