সন্ধ্যা ৭:৫৬ | শনিবার | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ইলিশের দাম বেশ ‘চড়া’

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ এপ্রিল ২০২৫

এক কেজি বা তারচেয়ে বড় ইলিশ কিনতে চাইলে আপনাকে দু-তিন বাজার ঘুরতে হবে। কারণ বাজারে বড় সাইজের ইলিশ মাছের সরবরাহ কম। এরপর যখন কোথাও এ মাছে খুঁজে পাবেন, সেখানে দাম শুনে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হবে। এখন এক কেজি বা এর চেয়ে কিছুটা বড় ইলিশের দাম ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৪ হাজার টাকায় উঠেছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ। যে কারণে এখন রাজধানীর বাজারে ইলিশ মাছের দাম বেশ ‘চড়া’। বিশেষ করে বড় সাইজের ইলিশের সরবরাহ একদমই কম। দাম আকাশচুম্বী। বৈশাখের আগের দিন রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।

ইলিশের দাম বেশ ‘চড়া’

ক্রেতাদের অভিযোগ, বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশের প্রধান অনুষঙ্গ ইলিশের এ ‘নগরকেন্দ্রিক’ চাহিদাকে পুঁজি করে ফায়দা লুটছেন পাইকারি ও খুচরা মাছ ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের দাবি, বৈশাখী উৎসব ঘিরে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বাজারগুলোয় ইলিশের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু বর্তমানে জাটকা ধরা নিষেধাজ্ঞায়, অনেক নদীর মোহনায় ইলিশ ধরা বন্ধ, ফলে বাজারে সরবরাহ কমেছে। এতে খুচরা ও পাইকারি—দুই বাজারেই ইলিশের দাম বেড়েছে।

মালিবাগ, রামপুরা ও মধ্যবাড্ডার বাজার ঘুরে এদিন ইলিশের যে খুচরা দাম পাওয়া গেছে সেটা হলো- ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম সাইজের ইলিশের দাম ২০০০ থেকে ২৪০০ টাকা, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের কেজি ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের কেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা আর চার-পাঁচটা মাছ মিলে এক কেজি অর্থাৎ ২০০-২৫০ গ্রামের কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা আলতাফ হোসেন বলেন, এখন জাটকা ধরা বন্ধ, যে কারণে অনেক স্থানে মাছ ধরা বন্ধ আছে। আবার বৈশাখের পরের দিন থেকে মাছ আর পাওয়ায় যাবে না। যে কারণে মাছের বাজারে একটা ঘাটতি তৈরি হয়েছে, যেখানে বৈশাখের মধ্যে চাহিদা বেড়েছে।

ইলিশের দাম বেশ ‘চড়া’

বর্তমানে জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ রয়েছে। যে কারণে দেশের বিভিন্ন অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ। এছাড়া আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন ইলিশ ধরা ও বাজারজাত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। এ কারণে বিশেষ করে চট্টগ্রামের মাছ বেশি এসেছে বাজারে।

এদিকে খুচরা বাজারের পাশাপাশি পাইকারি বাজারেও ইলিশের দাম বেড়েছে। ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী ও মেরুল বাড্ডার পাইকারি আড়তে সরবরাহ সংকটে ইলিশের মণ ছুঁয়েছে লাখ টাকা। ছোট আকারের ইলিশের মণও ছাড়িয়েছে অর্ধ লাখ টাকা।

ইলিশ বিক্রেতা ফরিদ হোসেন বলেন, গতরাতে প্রতি কেজি মাছের দাম আগের দিনের চেয়ে ২০০ টাকা বেড়েছে। এমনকি বরিশাল ও চট্টগ্রামের যেসব মোকাম থেকে ইলিশ আসছে, সেখানেও বেশি।

বিজন কুমার নামের একজন বলেন, বরিশালের মাছ নেই। মেঘনা নদীর অভয়াশ্রমে দুই মাস ধরে মাছ শিকার নিষেধাজ্ঞা। এছাড়া অন্য সব নদ-নদীতেও বর্তমানে ইলিশসহ অন্য মাছের বেশ আকাল চলছে।

বাড্ডার বাজারে ৭০০ গ্রাম সাইজের ইলিশের হালি ১০ হাজার টাকা হাঁকছিলেন বিক্রেতা জামাল হোসেন। তার কাছে জানতে চাইলে বলেন, এক সপ্তাহ আগে এসব মাছ ২০০০ টাকার নিচে ছিল প্রতিপিস। অর্থাৎ হালিতে ২০০০ টাকার বেশি বেড়েছে।

jagonews24

ওই বাজারে ইলিশ কিনতে আসা একজন ক্রেতা বলেন, কিছুই না, এরা (মাছ বিক্রেতারা) সুযোগ বুঝে কোপ মারছে। কিছু বড়লোক আছে, তারা কিনছেনও। তবে আমাদের মতো যারা হিসাব করে সংসার চালায় তাদের বৈশাখে মাছ জুটবে না।

এদিকে বাজারে বড় মাছের সরবরাহ একেবারেই কম কেন জবাবে ইলিয়াস হোসেন নামের একজন বিক্রেতা বলেন, এক কেজি সাইজের ইলিশ পাইকারিতে ৩২০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। কিনে এনে কী দামে বেচবো? আর যদি বিক্রি না হয় তাহলে কী হবে? বৈশাখের পরে ইলিশ বেচা নিষিদ্ধ।

এদিকে চড়া মাছের দাম ও ঈদের পরপরই বৈশাখ বলে এবার ইলিশের কাটতি কম বলে জানিয়ে পাইকারি মাছ বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ঈদের পরে মানুষের হাতে টাকা নেই। যে কারণে বিক্রি ভালো নয়।

 

টি আই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *