সন্ধ্যা ৭:৫৩ | শনিবার | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি: পল ক্রুগম্যান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৮ এপ্রিল ২০২৫

 

বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পোশাকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক আরোপ উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান। তিনি বলেছেন, বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিদের দেশের এই সিদ্ধান্ত মার্কিন ক্রেতাদের জীবনে বিঘ্ন ঘটাবে এবং মার্কিনিদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে।

দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন দেশের ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্ককে বিশ্বের ইতিহাসের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ধাক্কা বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।

পল ক্রুগম্যান বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করাটা একেবারেই উচিত নয়। এটি এমন এক পদক্ষেপ যা আমেরিকান ক্রেতাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে তোলে, আমাদের অধিক নিরাপত্তার জন্য কিছুই করে না।

তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনায় দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে বন্ধু ও প্রতিবেশী দেশগুলোর কথাও বিবেচনায় রাখতে হবে। নিকটবর্তী দেশগুলো থেকে পণ্য নিলে সরবরাহ ব্যবস্থা সহজ ও নিরাপদ থাকবে। যদি আমরা এটি করতে চাই, তাহলে আমরা ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশে শুল্ক আদায় করব না। আমরা অবশ্যই কানাডা এবং মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপ করবো না; যদিও এসব দেশ শুল্ক থেকে অব্যাহতি পেয়েছে।

মার্কিন এই অর্থনীতিবিদ বলেন, যা ঘটেছে, সেই বিষয়ে আমাদের কাছে কিছু চাক্ষুষ প্রমাণ আছে। পিটার নাভারো, যিনি ট্রাম্পের বাণিজ্য জার। আমি জানি না তাকে এখনও বাণিজ্য জার বলা হয় কি না। কিন্তু কিছু প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কারণ তারা মূলত জ্যারেড কুশনারকে আমাজনের মাধ্যমে অনুসন্ধান ও এমন কাউকে খুঁজে পেতে পাঠিয়েছিল যারা চীন বিরোধী বই লিখেছিল।

 

 

শ ই / এনজি

তারা মূলত জার যা শুনতে চান, সে ধরনের কথাই বলবেন এমন লোকজনকে খুঁজছিলেন। এর মধ্যে একটি গল্প আমার কাছে বেশ মজাদার মনে হয়েছে। বব লাইথিজার ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের সংরক্ষণবাদী কণ্ঠস্বর। তিনি সাধারণত আমার বন্ধুদের মাঝে বাণিজ্য নীতি বিতর্কে এক ধরনের অন্ধকার, শয়তানি শক্তি হিসাবে বিবেচিত হন।

তবে তিনি সম্মানিত কারণ তিনি স্পষ্টভাবে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানেন। লোকজন ধরে নিয়েছিল, তিনি এই প্রশাসনে বড় ভূমিকা পালন করবেন। কিন্তু তিনি প্রায় নিশ্চিতভাবেই পারেন নাই। কারণ তিনি স্বাধীন চিন্তাশীল। তিনি নিজের মতো। কিন্তু তিনিও ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে ঠাঁই পাননি। প্রশাসনে থাকলে তিনি হয়তো রাজাকে বলতে পারতেন: না, বাংলাদেশের পণ্যে কোনও শুল্ক আরোপ করা যাবে না।

এর আগে, গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন এই ঘোষণার আগে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বছরে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন (৮৪০ কোটি) ডলার। এই রপ্তানির বেশিরভাগই তৈরি পোশাক। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন (৭৩৪ কোটি) ডলার।

সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *