সকাল ১০:২২ | শুক্রবার | ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দল থেকে বাদ পড়ার জন্য হাথুরুকে দুষলেন নুরুল হাসান সোহান

বিশেষ সংবাদদাতা

৩০ মার্চ ২০২৫

 

 

একজন সম্ভাবনাময়ী উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। জাতীয় দলের হয়ে খুব বেশি খেলার সুযোগ পাননি। মাত্র ১১টি টেস্ট, ৭টি ওয়ানডে এবং ৪৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই ক্রিকেটার সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করে গেরেও জাতীয় দলের দরজা আর তার জন্য খোলা হয়নি।

শুধু ক্রিকেটারই নয়, অধিনায়ক হিসেবেও বেশ ভালো যোগ্যতা আছে সোহানের। বিপিএলে রংপুর রাইডার্স, প্রিমিয়ার লিগে সাবেক শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের (বর্তমানে ধানমন্ডি ক্লাব) নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অনেকেরই ধারণা, জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবেও বেশ ভালো করতে পারতেন সোহান। তাকে সেভাবে গড়ে নিতে পারলে দলেরই উপকার হতো।

কিন্তু গড়ে নেয়া তো দূরে থাক, পর্যাপ্ত সুযোগই দেয়া হয়নি সোহানকে। তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সুনজরে আসতে পারেননি। এ কারণে কৌশলে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সোহান।

সম্প্রতি এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে দল থেকে বাদ দেয়ার কারণে হিসেবে সরাসরি হাথুরুসিংহেকেই অভিযুক্ত করেছেন সোহান।

সোহানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘তবে কি আপনার মনে হয় আপনি জাতীয় দলে সে অর্থে কমফোর্ট জোন পাননি? তবে কি কোন অন্যায়ের স্বীকার হয়েছেন? আপনার কি মনে হয় আপনাকে ইচ্ছে করেই বাদ দেয়া হয়েছে? নির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধে কি আপনার কোন অভিযোগ আছে?’

জবাবে সোহান বলেন, ‘দেখুন! থ্রু আউট মাই ক্যারিয়ার আমি নেভার এভার কোচিং স্টাফ বা সিলেক্টরদের ব্যাপারে কোন নেতিবাচক কথা বলেছি। কখনো কারো বিপক্ষে অভিযোগ করা আমার স্বভাববিরোধী। কিন্তু আমি আপনাকে একটা উদাহরণ দিতে পারি, আমার সন্দেহর তীর একজনের ওপর আছে। তিনি সরাসরি না হলেও আমাকে বাদ দেয়ার চিন্তায় ছিলেন।

কে তিনি? কার বিপক্ষে আপনার অভিযোগের তীর? জবাবে সোহান বলেন, ‘হাথুরুসিংহের সময় আমার ডেব্যু হয়েছিল। ২০১৬-২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড ট্যুরে আমাকে জাতীয় দলে প্রথম সুযোগ দেয়া হয়। আমার মনে হয়, হাথুরু শর্ট টার্মের জন্য ভাল কোচ। একটা দলকে অল্প ভাল খেলানোর ফর্মুলা তার ভাল জানা। তবে তার কিছু সমস্যার কথা অনেকেরই অজানা। হাথুরু যদি চাইতেন কোন ক্রিকেটারকে ন্যাশনাল টিম থেকে চিরতরে বা লং টাইমের জন্য বাদ দিতে, সেটাও তিনি পারতেন। সে টেকনিকও তার জানা ছিল। সে যদি চাইতো যে একজন ক্রিকেটার ভাল পারফরম করবে না, তাকে কিভাবে খারাপ খেলাতে হয়, সে কৌশলও তার জানা ছিল। কোন প্লেয়ারকে যদি সে বাদ দিতে চায়, তাহলে সে তাকে বেশ কৌশলে তাকে বাদ দিতে পারতো।’

সেটা কেমন? সোহান বললেন, ‘আমার সাথেই এমন ঘটেছে। স্পষ্ট মনে আছে, আমাকে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম টেস্টে সুযোগ দেয়া হয়। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে অভ্যস্ত না হলে ভাল খেলা কঠিন। রান করা আরও কঠিন। তারপরও আমি প্রথম টেস্ট ইনিংসে ৪৭ রান করি। সেকেন্ড ইনিংসে রান করিনি।’।

‘এখনো মনে আছে ফার্স্ট ইনিংসের পর হাথুরু বললেন, হ্যাঁ খুব ভাল ব্যাটিং করেছো। কিন্তু ঠিক একদিন পর যেই সেকেন্ড ইনিংস খারাপ খেললাম, সাথে সাথে তার ম্যুড আর কথা পাল্টে গেল। তিনি আমাকে বললেন, হ্যাঁ তোমার ব্যাটিংয়ের অনেক প্রবলেম আছে। এই টেকনিক ও দূর্বলতা ও ঘাটতি নিয়ে চলবে না। তোমার ব্যাটিংয়ে প্রচুর ফাঁক-ফোকর আছে। তোমাকে এই করতে হবে, সেই করতে হবে।’

‘একটা টেস্ট চলাকালীন যদি আপনি আমাকে তেমন টোনে কথা বলেন, তখন আমার আর ভাল খেলার মন মানসিকতাই নষ্ট হয়ে যায়। আমার যদি কোনই কোয়ালিটি না থাকতো, তাহলে আমি নিশ্চয়ই ফার্স্ট ইনিংসে অনেকক্ষণ উইকেটে থেকে ৪৭ করতে পারতাম না। এ ব্যাপারগুলো খুব ম্যাটার করে। আমার মনে হয়, আমি অনেকবার এমন নেগেটিভ সিচ্যুয়েশন ফেস করেছি। তাতে করে নিজের যে বিশ্বসটা ছিল, সেটাও ওঠা নামা করেছে।’

 

জ উ/ এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *