বিকাল ৩:২৭ | শনিবার | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ সেনা বাহিনীকে বিতর্কিত করে জনগনের মুখোমুখি করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে —— তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ মার্চ  ২০২৫

 

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ সেনা বাহিনীকে বিতর্কিত এবং জনগনের মুখোমুখি করিয়ে দেবার গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আজ সোমবার এক ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সকলকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আমরা দেখেছি অতীতের স্বৈরাচার দেশের প্রত্যেকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধবংস করে দিয়েছে। এই মুহুর্তে আমরা দেখতে পারছি, আমরা কথা প্রসঙ্গে বলে থাকি, বুঝে থাকি যে, সার্বভৌমত্বে প্রতীক একটা বাংলাদেশের বাংলাদেশ সেনা বাহিনী, সেই সেনাবাহিনীকে আমরা দেখতে পারছি বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে, জনগনের মুখোমুখি করিয়ে দেবার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ক‘দিন আগে আমরা যেমন দেখেছি, সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করার চেষ্টা হচ্ছে। ঠিক একইভাবে সেনাবাহিনীকে জনগনের মুখোমুখি করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনি একজন সাংবাদিক হিসেবে, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এতটুকু বুঝি এটি নিশ্চয় কিছু না কিছু ষড়যন্ত্র আছে। আমরা সকলে মিলে, দেশপ্রেমিক প্রতিমানুষ যদি আমরা যদি সচেতন থাকি, সচেষ্ট থাকি অবশ্যই আমরা এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো।

তারেক রহমান বলেন, আমি সহজে বুঝতে পারছি একটি মহল, তারা তাদের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। আমরা একসাথে যদি কাজ করি অবশ্যই এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সক্ষম হবো… আমাদেরকে যেকোনো মূল্যে অবশ্যই এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।

ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সাংবাদিকদের বিরাট ভূমিকা আছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে দেশে পরিবর্তন হোক, বাংলাদেশে স্থিতিশীল অবস্থা ফিরে আসুক এটাই জনগন প্রত্যাশা করছে। এই ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনেক।

সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ‘র ফেইসবুক পেইজে পোস্ট, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার নিজের ফেইসবুকে পেইজে প্রকাশ করা ভিডিও বার্তা এবং সর্বশেষ জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি জরুরী সংবাদ সম্মেলনে ‘রাজনীতি নিয়ে কোনো প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার’ সেনাবাহিনী কিংবা রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই এরকম বক্তব্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপের মধ্যে সোমবার বিএনপি তার অবস্থান পরিস্কার করল।

ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে বিএনপি মিডিয়া সেলের উদ্যোগে গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সন্মানে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে অত্যন্ত সুচতুরভাবে একটা নতুন চক্রান্ত শুরু হয়েছে.. সেই চক্রান্ত বাংলাদেশকে আবার অস্থিতিশীল করা, বাংলাদেশকে আবার বিপদে নিমজ্জিত করবার জন্য। বাংলাদেশের যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভ্মৌত্বের ক্ষেত্রে তার রক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানৃ তাদেরকে বিতর্কিত করা হচ্ছে বিশেষ করে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা হচ্ছে। এটার পেছনে উদ্দেশ্য একটাইৃ অতীতেৃ যেভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করা হয়েছে, আজকে আবার বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যেন বিপন্ন হয়, আমরা যেন আবার অরক্ষিত হয়ে পড়ি, আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী যারা দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে জাতির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তাদেরকে আজকে আবার বিতর্কিত করার একটা হীন প্রচেষ্টা চলছে। সাংবাদিক বন্ধুরা আপনারা সবসময় জাতির বিবেক হিসেবে জাতির সামনে দাঁড়িয়েছেন, বিপদের মুহুর্তগুলোতে আপনারা অতিক্রম করে জনগনকে সঠিক সংবাদ দিয়েছেন। আপনারা সেই একই ভূমিকা পালন করবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ৫ তারিখের আগের যে পরিস্থিতি ছিলো সেই পরিস্থিতি যদি আবার ফিরে আসে এই দেশের অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যাবে। দেশের অস্তিত্বকে নষ্ট করার জন্য দেশে-বিদেশে বহু বিদগ্ধ কাজ করছে। গত দুইদিনের ঘটনা যদি আমরা দেখি বহু কিছু বেরিয়ে আসবেৃ বিষয়টা এতো সহজ না আমরা কথা বললেই একজন লোক দেশে রাগ করেন আরেকজন লোক বিদেশে বসে রাগ করেন। মনে হয়, নির্বাচনের কথা আমি বলেছিলাম, আমরা কথা বলার ৭দিন পরে কয়েকটা রাজনৈতিক দলের সংস্কারের মতামত জমা হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে। আমি কি ভুল বলেছিলাম? সবাই কমবেশি দ্বিমত পোষণ করেছে। আমি মুখে বলেছিলাম, আপনাদের সব বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব হবে না। এর প্রেক্ষিতে আমার জ্ঞাতি-গোষ্ঠি তুলে গালি-গালাজ করেছে। তিনি বলেন, কেউ কেউ বলে এই দেশটা কারো বাপের না। আমি মুক্তযুদ্ধ করেছি। এই দেশটা যদি আমার বাপের না হতো, এই দেশটা যদি আমার দাদার বাপের না হতো তা হলে আমার হতো না, এদেশটা যদি আমার না হতো তাহলে আমার ছেলে দেশ হতো না। সুতরাং এই কথা যারা বলে কথা সাবধানে বলবেন। যারা বলেন, এই দেশটা বাপের না। তাদেরকে আমি বলতে চাই, এই দেশটা আমাদের সকলের। এই দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, প্রয়োজনের আমরা লড়ে যাবো।

যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব এই আলোচনা সভায় মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল বক্তব্য রাখেন। জাতীয় দৈনিক, সংবাদ সংস্থা, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতৃবৃন্দরা এই ইফতারে অংশ নেন।

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *