নিজস্ব প্রতিবেদক
১২ মার্চ ২০২৫
‘বাংলাদেশ কারো তালুকদারি নয়’ বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মির্জা আব্বাস।
বুধবার দুপুরে শাহজানপুর বিএনপির এক প্রশিক্ষন কর্মশালায় নির্বাচন বিলম্ব নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক প্রতি ইংগিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছি গণতন্ত্রের জন্য, কথা বলার জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য। আজকে যখন ভোটে সময়ে আসছে এখন বলেন, এটা না্ করলে ভোট হবে না, ঔটা না করলে ভোট হবে না…কেন রে ভাই কেনো? ”
‘‘ আওয়ামী লীগ তো দেশটাকে বাপের তালুকদারি ভেবেছিল যার কারণে যা-খুশি তাই হয়েছে। আপনারও কি তাই ভাবেন? এই বাংলাদেশ কারো তালুকদারি নয়। এই বাংলাদেশ জনগনের। সুতরাং কথা-বার্তা বলার সময়ে হিসেব করে বলবেন। যাতে আমাদেরকে বে-হিসাবি কথা বলতে না হয়।”
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘ অনেকের ভেতরে কিছু লোভী রাজনীতিবিদ আছেন, কিছু লোভী রাজনৈতিক দল আছে যারা শুধুমাত্র বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা করে, কার্য্কর কোনো বিরোধিতা নয়। এই দলগুলো পাকিস্তান সৃষ্টির লগ্ন থেকে ভারত বিভক্তি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত শুধু বিরোধিতাই করে গেলো… দেশপ্রেমের লেশমাত্র তাদের ভেতরে নাই।তারা দেশকে ভালোবাসে না, দেশের মানুষকে ভালোবাসে না।”
‘‘ তারা ভালোবাসে যেভাবে হোক ক্ষমতায় থাকতে হবে, যেভাবেই হোক ক্ষমতায় যেতে হবে। আমাদের তো আপত্তি নেই দেশে যদি ভোটে আপনাদের ক্ষমতায় নেই আপত্তির কি আছে? ভোটে আসেন। ভোটকে ভয় পান কেনো? নির্বাচনকে ভয় পান কেনো?”
নির্বাচনের বিরোধিতাকারী রাজনৈতিক দলগুলো নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘‘ যারা লম্বা লম্বা কথা বলেন আজকে.. নির্বাচন করতে দেয়া হবে না, করতে দেয়া যাবে না…তারা বুকে হাত দিয়ে বলেন, এই জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আপনাদের ক‘জন নেতা-কর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন? বিএনপির ৪২২ জন নেতা-কর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন শহীদ হয়েছেন এক মাসে। আপনাদের ক‘জন হয়েছে?”
রাজধানীর ঢাকা মহানগরের দক্ষিন বিএনপির উদ্যোগে শাহজাহানপুরে রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব মাঠে বিএনপির উদ্যোগে ‘রাষ্ট্র কাঠামোর মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এই প্রশিক্ষন কর্মশালা হয়।
‘গণমাধ্যমের সমালোচনা’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘ আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা আজকাল অনেক দলের কথা পত্র-পত্রিকায় লেখে না, অনেক দলের খারাপ কথা লেখে না, ভালো কথা হয়ত লেখে দুই-একটা।”
‘‘ আর বিএনপির ভালো কথা লেখে না। খারাপ দুই-একটা লেখে দেয়।”
তিনি বলেন, ‘‘একটা কথা আছে না… সব পাখি মাছ খায় দোষ করে মাছরাঙ্গা। এখন বিএনপির বিরুদ্ধে বলতে সহজ। মরহুম সাইফুর রহমান সাহেব বলতেন, সিলেটি ভাষায় বলতেন.. হাড্ডিার পাশের মাংস খাইতে খুব মজা লাগে। বিএনপির একটি বড় দল, গুছানো দল, সুন্দর দল…. এই দলের বদনাম করতে খুব মজা লাগে মানুষের।”
‘‘ বিভিন্ন দল এক যোগে, বিভিন্ন টেলিভিশন এক যোগে, বিভিন্ন ইউটিউভার একযোগে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে কনসার্টও্য়েতে। এগুলোকে প্রতিরোধ করতে হবে আমাদের কাজের মাধ্যমে জনগনের পাশে থেকে তাদের বুঝাতে হবে বিএনপি ছাড়া এদেশে জনগনের কোনো বন্ধু নাই।”
‘চাঁদাবাজদের প্রতিরোধ করুন’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘আপনাদের বিরুদ্ধে অনেক বদনাম করতেছে কিন্তু ওই সমস্ত লোকগুলো। অপকর্ম করে তারা, চাঁদাবাজী করে তারা, দুস্কর্ম করে তারা, চাপিয়ে দেয় বিএনপির ওপরে। এই সমস্ত চাঁদাবাজদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে্, প্রতিহত করতে হবে মুখের কথা অথবা কাজে।”
‘‘যদি না করেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব বার বার বলেছেন, যদি জনগনের মন থেকে উঠে যান… আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে তার চেয়ে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। সাবধান থাকবেন।”
তিনি বলেন,‘‘ আপনাদের সবার নামে না, দুই-একজনের নামে অভিযো্গ আছে। আমরা একটা এলাকায় এক‘শ কর্মী আছে দুইটা কর্মী খারাপ… বদমাইসি অপকর্ম করে। যদি হয় আমার ৯৮ জন কর্মী তো খারাপ না। সুতরাং দু‘জন লোকের জন্য আমার সমস্ত কর্মী কালিমা লিপ্ত হবে এটা হতে দেয়া যাবে না।”
‘‘ যদি কোনো চাঁদাবাজ ঢুকে পড়ে কিংবা আসে… অনেক চাঁদাবাজ কিন্তু আওয়ামী লীগ.. এখন দলের মধ্যে আছে। সব দলেই… বিএনপিতে আছে, জামায়াতে আছে এবং অন্যান্য সংগঠনের ঢুকে গেছে তারা, সব দলে কম-বেশি আশ্রয় নিয়ে নিয়েছে। ওই সমস্তদের চিহ্নিত করেন, চিহ্নিত করে ওদের দল থেকে বের করে দেন অথবা পুলিশকে সোপর্দ করেন।”
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘ ওরা ঢুকতে পারে কিন্তু চিহ্নিত করে একটা একটা করে দল থেকে বের করে দেবেন, দলে ওদের অবস্থান হবেনা। ’’
‘‘ বিএনপিতে কোনো অপকর্মকারী, কোনো দুস্কৃতিকারী, কোনো চাঁদাবাজীর জায়গায় বিএনপিতে নাই, হবে না…কেনো খারাপ লোকের জায়গা বিএনপিতে হবে.. এই কথা মনে রাখবেন।”
ঢাকা মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মহানগর নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
জা ই / এনজি