কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতার কারণে টানা ৯ দিন বন্ধ থাকার পর খুলছে ঢাকার মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। সোমবার (২৯ জুলাই) থেকে আবার চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতা চলায় গত ১৯ জুলাই চিড়িয়াখানায় কোনো দর্শনার্থী আসেননি। পরে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হলে ২০ জুলাই থেকে চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখা হয়।
চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা জানান, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে এখানে দর্শনার্থী আসেন ১০ হাজার। অন্যান্য দিনে সংখ্যাটা থাকে প্রায় ৪ হাজার। প্রতি সপ্তাহে রোববার বন্ধ থাকে চিড়িয়াখানা। প্রাণী জাদুঘর এবং শিশু পার্কে আলাদা আলাদা টিকিট থেকেও বেশ আয় হয়। গত কয়েক দিন বন্ধ থাকায় বিপুল পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়েছে চিড়িয়াখানা।
রোববার (২৮ জুলাই) মিরপুর চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশমুখে টিকিট কাউন্টারের সামনে কেউ নেই। প্রবেশপথের বামপাশে নিজেদের বেষ্টনীর কাছাকাছি চলে এসেছে চিত্রাহরিণের দল। একটু এগোতেই জলহস্তী বেষ্টনী। অন্য সময় জলাধারে মুখ ডুবিয়ে থাকে জলহস্তীগুলো। এখন সেখানে উল্টো চিত্র। ১২টি জলহস্তীর সবগুলোই ডাঙায় উঠে চলে এসেছে খাঁচার সামনে। চারদিকে সুনশান নীরবতা থাকায় দূর থেকেও শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন পশু-পাখির ডাক।
জলহস্তীদের তত্ত্বাবধায়ক মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘দর্শক নেই, তাই জলহস্তীরা ডাঙায় উঠেছে। ২০ বছর ধরে চিড়িয়াখানায় আছি। চার বছর আগে করোনার সময় এমন অবস্থা দেখেছি।’
নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে চিড়িয়াখানা বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানান বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার। তিনি বলেন, ‘মিরপুর চিড়িয়াখানা দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্থাপনা। এখানে দুর্বৃত্তের হামলা হলে হিংস্র প্রাণীরা বেরিয়ে এসে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। একইসঙ্গে প্রাণীদের ঠেকিয়ে রাখাও কঠিন। তাছাড়া অবরোধ আর কারফিউতে দর্শকও কম পাওয়া যাচ্ছিল। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ করে দিই।’
তিনি বলেন, ‘১৯ জুলাই সহিংসতার কারণে কোনো দর্শনার্থী আসেননি। হামলার আশঙ্কায় ২০ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত চিড়িয়াখানায় টিকিট বিক্রিসহ অন্যান্য খাত মিলিয়ে আমরা ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছি।’
দ্রুত এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন হবে জানিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কারফিউ শিথিল থাকায় ২৯ জুলাই থেকে চিড়িয়াখানা খুলে দিচ্ছি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত চিড়িয়াখানায় আগের মতো দর্শনার্থী না-ও আসতে পারে।’
জা ই /এনজি