সকাল ১১:৫৫ | মঙ্গলবার | ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বসন্তকাল | ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিপিএ’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি, বিভক্তি না তৈরির আহ্বান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৩ মার্চ ২০২৫

 

 

গত ২ মার্চ বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ মনোনয়ন করা হলেও এবার আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার ঘোষণা দিয়েছেন নতুন কমিটির দায়িত্ব পাওয়া চিকিৎসক নেতারা। এ লক্ষ্যে কোনোরকম বিভক্তি তৈরি না করে বিপিএতে সম্পৃক্ত শিশু বিশেষজ্ঞদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ই-ব্লকের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত জরুরি সাধারণ সভায় এই কথা জানানো হয়।

সভায় জানানো হয়, গত ২ মার্চ (রোববার) অধ্যাপক ডা. মো. সেলিমুজ্জামানকে সভাপতি, অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক এবং ডা. আতিয়ার রহমানকে কোষাধ্যক্ষ করে আগামী দুই বছরের জন্য নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক ডা. মেছবাহ উদ্দিন।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রসঙ্গে বিপিএ সভাপতি অধ্যাপক সেলিমুজ্জামান বলেন, আমাদের যে কমিটি করা হয়েছে, সেখানে শিশু হাসপাতাল থেকে আমি সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বিএমইউর অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান ও ডা. আতিয়ার রহমান কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন। তাদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশিত হবে। কথা দিচ্ছি, আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করবো। কে সরকারি, কে পিজি, কে শিশু, কে লাল, কে নীল—আমরা এটা দেখবো না। দেখা উচিতও না। আমরা সবাই পেডিয়াট্রিক মেডিসিনের, যেটি একটি পেশাগত সংগঠন।

তিনি বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা অ্যাসোসিয়েশনের কাজ এগিয়ে নিতে উপদেষ্টাসহ স্বাস্থ্যখাতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি, কথা বলি। চিকিৎসকদের পদোন্নতিসহ বিভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে মিটিং করি।

অধ্যাপক সেলিমুজ্জামান বলেন, শুরুতে অধ্যাপক ডা. মিসবাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। তিনি ছিলেন আহ্বায়ক। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সেই কমিটির একটি কমিটি করার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এটা সম্ভব হয়নি। তার পরের এক মাস শুধু আহ্বায়ক ছিলেন অধ্যাপক ডা. মিসবাহ উদ্দিন। এই পরিস্থিতিতে ওই মাসের শেষ দিন আমাদের তিনজনকে দায়িত্ব দেন তিনি। এর মধ্যে আমাকে সভাপতি, অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক ও ডা. আতিয়ার রহমানকে কোষাধ্যক্ষ করে একটি কমিটি করেন। বিপিএর নিয়ম অনুযায়ী, এই কমিটিকে এজিএমের মাধ্যমে পাস করাতে হবে। যার ফলশ্রুতিতে আমাদের এই কমিটি সৃষ্টি হয়।

বিপিএ সভাপতি বলেন, সরকারি চিকিৎসকদের পদায়নের কোনো নিশ্চয়তা নেই। আজ আছেন, নয় মাস পর তিনি নাও থাকতে পারেন। তাকে হয় তো মানিকগঞ্জ পদায়ন করা হলো। সভাপতি-সেক্রেটারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ। বিপিএর সংবিধান অনুযায়ী, সভাপতি, সেক্রেটারি ও কোষাধ্যক্ষকে ঢাকার হতে হয়। সুতরাং যারা বদলিযোগ্য চাকরি করেন, তাদের এই পদে না আসাই ভালো। আমাদের আসলে জ্যেষ্ঠদের সম্মান করা উচিত, অনুজদের স্নেহ করা উচিত। আমরা যদি অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকদের সম্মান না করি, এখানে যদি রাজনীতির ঝনঝনানি বেশি হয়, তাহলে মুশকিল হবে।

নেতৃত্বের জন্য দীর্ঘ দিনের সাংগঠনিক তৎপরতা জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, হঠাৎ করে এসে কেউ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সেক্রেটারি হতে পারে না। একজন চিকিৎসককে প্রথমে জুনিয়র কনসালটেন্ট হতে হয়, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, তার পর অধ্যাপক হন। এমডি-এমএস, এফসিপিএস করার পরই দিনই কিন্তু অধ্যাপক হওয়া যায় না। তেমনিভাবে বিপিএতে প্রথমে সদস্য নির্বাচিত হতে হয়। যারা কখনো কোনো দায়িত্ব নেননি, নির্বাচন করেননি, সদস্যদের সমর্থন পাননি, তারা যদি হঠাৎ পড় পদ চান, তাহলে হলো না। তিনি আসতেই পারেন, তার যোগ্যতা আছে, তবে তাঁকে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসতে হবে।

এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান বলেন, আমাদের লক্ষ্য, সবাইকে নিয়েই কমিটি করবো। আজকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ—এই তিনটি পদে নাম ঘোষণা করা হচ্ছে। আমাদের সর্বমোট ৩৭ পদ আছে। সেখানে অন্যদের জন্য সুযোগ রাখা হয়েছে। এখানে সবাইকে যুক্ত করা হবে। হয় তো এমন হতে পারে যে, সব মানুষ চাইলেই হয় তো একটি পদ দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে দেওয়ার চেষ্টা করবো। এখনও ৩৪ পদ শূন্য আছে। সেসব পদে তাদেরকে নিয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে একটি কমিটি করবো ইনশাল্লাহ। কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতেই আমরা ৪৮ ঘণ্টা সময় রেখেছি আমরা।

অনুষ্ঠানে বিপিএর সঙ্গে বহু আগে থেকে নিজের সম্পৃক্ততার কথা জানান নবগঠিত কমিটির কোষাধ্যক্ষ ডা. আতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, যখন আমি পেডিয়াট্রিশিয়ান হই, ১৯৯৯ সালের পর বিপিএর সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হই। এর পর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি নির্বাচন করি।

 

 

শ ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *