বিকাল ৫:১৭ | বুধবার | ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

হঠাৎ ঢাকায় শাবনূর, জানা গেল কারণ

বিনোদন ডেস্ক
০৯ এপ্রিল ২০২৫

 

চিত্রনায়িকা শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বাসিন্দা। পরিবারের সঙ্গেই স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করছেন তিনি। মাঝেমধ্যে দেশে ফেরেন, কিছুদিন থাকেন, আবার ফিরে যান—গত দশ বছর ধরেই এমনভাবেই চলেছে একসময়ের ঢালিউড কাঁপানো এই নায়িকার জীবন।

তবে এবার তার ফেরা ছিল একেবারেই ভিন্নরকম। একেবারে হঠাৎ করে, কোনো ঘোষণা ছাড়াই তিনি এসেছিলেন ঢাকায়; থেকেছিলেন মাত্র ৮ ঘণ্টা। এত কম সময়ের জন্য আসাটা অবাক করলেও এর পেছনে রয়েছে এক গভীর ব্যক্তিগত কারণ।

শাবনূর নিজেই জানিয়েছেন, এই সফর ছিল অন্যরকম। সাধারণত দেশে ফেরার আনন্দ থাকে, প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা হয়, সময় কাটে চেনা পরিবেশে। কিন্তু এবারের সফরে সেই স্বস্তি ছিল না বরং ছিল প্রচণ্ড অস্থিরতা আর দুশ্চিন্তা।

জানা গেছে, শাবনূরের এই হঠাৎ বাংলাদেশে আসার কারণ তার মায়ের অসুস্থতা। অসুস্থ মাকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশে ফেরার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তাকে ঢাকায় আসতে হয়। সময় এতটাই সংকটাপন্ন ছিল যে কাউকে কিছু জানিয়ে ওঠার সুযোগও পাননি তিনি।

সিডনির সময় অনুযায়ী গত ২৮ মার্চ তিনি একা মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা রওনা দেন। ঢাকায় পৌঁছান এবং মাকে নিয়ে আবার উড়াল দেন—সব মিলিয়ে মাত্র কয়েক ঘণ্টার সফর।

এই পুরো যাত্রাপথটা কিভাবে কেটেছে সেই অস্থিরতা কল্পনাও করতে পারেন না এ অভিনেত্রী।

এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে শাবনূর বলেন, এক মাস ধরে আম্মা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রতিনিয়ত ফোনে কথাবার্তা হচ্ছিল। ঢাকার বড় বড় হাসপাতালের ৩-৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে তিনি দেখিয়েছেন। কিন্তু কোনোভাবেই তারা আম্মার রোগ ধরতে পারছিলেন না।

এদিকে আম্মার শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। একটা সময় বোঝা গেল, আম্মার নিউমোনিয়া হয়েছে। এর বাইরে আরো কয়েকটি সমস্যা ছিল। ২৮ মার্চ তো এমন অবস্থা হয়েছিল, আম্মা কথা বলার মতো শক্তি হারিয়ে ফেলছেন। শ্বাসকষ্টে একদম কাবু হয়ে পড়েন। সেদিন আম্মার শারীরিক অবস্থা কেমন তা জানতে পারছিলাম না, কারণ তিনি কথা বলতেও পারছিলেন না। আম্মার দেখাশোনার দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তাকে শুধু বলেছি, আমি আসা পর্যন্ত আম্মার সঙ্গে থাকতে। আম্মাকে মানসিকভাবে শক্তি ও সাহস দিতে।

এরপর আমি টিকিট খোঁজা শুরু করলাম। সেদিন রাতেই অনেক কষ্টে টিকিট পেয়ে যাই। লাগেজ নিইনি, তাই কোনো কাপড়চোপড় নিইনি। বলা যায়, এক কাপড়েই উড়াল দিই। পাসপোর্ট, টিকিট ও একটা ব্যাগপ্যাক সঙ্গী করেই আমি বাসা থেকে এয়ারপোর্টের উদ্দেশে রওনা হই। প্লেনের পুরোটা সময়, ট্রানজিটের সময়—কিভাবে যে কেটেছে, তা বলে বোঝাতে পারব না। আম্মার জন্য শুধু দোয়া করছিলাম।’

শাবনূর বললেন, ‘ঢাকায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, চিকিৎসকরা একের পর এক শুধু আম্মার টেস্ট করাতে বলছেন। এক পর্যায়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতেও বললেন। কিন্তু এ অবস্থায় আমি কোনোভাবে হাসপাতালে ভর্তি করাতে ভরসা পাচ্ছিলাম না। আম্মারও কষ্ট হচ্ছিল। এসেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাড়াহুড়া করে আম্মার লাগেজ গুছিয়ে আবার উড়াল দিলাম।’

জানা গেছে, সিডনি যাওয়ার পরপরই তার মাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন থেকে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে বলে জানান শাবনূর। চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তার মা এখন পুরোপুরি সুস্থ।

শাবনূরের মা, ভাই ও বোন এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এখন স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে থাকেন। তবে সবাই কোনো না কোনো সময় আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন। এবার তার মা ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ঢাকায় ছিলেন। এর মধ্যে এক মাস ধরে শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

 

 

ফা আ/ এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *