বিশেষ প্রতিবেদন
মোহাম্মদ জাফর ইকবাল
১৫ এপ্রিল ২০২৫
গত রোববার সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা করে বাড়ানোর ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। এ দাম মেনে নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ আজ মঙ্গলবার থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়লো।
নতুন দাম অনুসারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে খরচ করতে হবে ১৮৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা। বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম হবে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা ছিল ১৫৭ টাকা।
একইসাথে নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ইউনিট ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। সোয়াবিন তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাম জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, সোয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর কারণে ভোক্তা পর্যায়ে এর মারাত্বক প্রভাব পড়বে। এমনিতেই নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে জনজীবনে নাভিশ্বাস দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় সোয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর কারণে প্রত্যেকটি পরিবারে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। অন্যদিকে শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে উৎপাদন খাতসহ নতুন বিনিয়োগে এর প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে করে নতুনরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে এবং জিনিসের দাম বাড়বে। এর মাশুলও দিতে হবে সাধারণ মানুষকে।
সয়াবিন তেল ও পামঅয়েল এর দাম বৃদ্ধির ঘোষণার পর রাজধানীর কৃষিমার্কেট, হাতিরপুল বাজার ও কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, সরকারের এ সিদ্ধান্তে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ভোক্তাদের মধ্যে। ব্যবসায়ীরা বলছেন নতুন তেলের দামের প্রভাব বাজারে পড়া শুরু হয়েছে। হাতিরপুল বাজারে ক্রেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এভাবে যদি সরকার জিনিস পত্রের দাম বাড়াতে থাকে তাহলে আমাদের জীবনযাপন করা মুশকিল হয়ে পরবে। এমনিতেই আয়ের সাথে ব্যয়ের কোনো মিল নেই। মাসের মধ্যভাগেই বেতনের টাকা শেষ হয়ে যায়। এর মধ্যে যদি নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে, তাহলে পরিবার নিয়ে খাবো কি? সরকারের উচিৎ দাম বৃদ্ধি না করে কমানো। কারণ সোয়াবিন তেল ধনী গরিব সবার দরকার হয়।
কৃষি মার্কেটে কথা হয় আহসান হাবিবেব সাথে। তিনি বলেন, আমাদের কথা কেউই চিন্তা করছে না। বিগত আওয়ামী সরকারও যখন ইচ্ছে তখন সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছে। এই সরকারও সেই পথেই হাঁটছে। ব্যবসায়ীরা যা বলেছে, তা মেনে নিচ্ছে। এখনো সেই সিন্ডিকেট বহাল আছে।
সয়াবিন তেলের মূল্য লিটার প্রতি ১৪ টাকা এবং নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ইউনিট ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে অবিলম্বে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি বলছে, এ সিদ্ধান্ত সরকারের অপরিণামদর্শিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এতে নতুন উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবে। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, গ্রাহক পর্যায়ে সয়াবিন তেল নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেছে তা অযৌক্তিক। বিগত সরকারের শাসনামলে শিল্পবান্ধব পরিবেশ না থাকায় নতুন শিল্প গড়ে ওঠেনি। এমতাবস্থায় নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সরকারের অপরিণামদর্শিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। অপরদিকে সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ১৪ টাকা বৃদ্ধির সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে দরিদ্র জনগণের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। সয়াবিন তেল সাধারণত দরিদ্র জনগণই রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকে। এই মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগের কারণ হবে। কাজেই সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরকারকে সরে আসা উচিত।
সূত্র মতে, গত রমযানের আগে ভোজ্যতেলের দাম সহনীয় রাখতে সরকার ভোজ্যতেলের ওপর যে শুল্ক-করে ছাড় দিয়েছিল, তার মেয়াদ গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়ায় এই দাম বাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপর ঈদের ছুটি শেষে গত সপ্তাহের শুরু থেকে দফায় দফায় আলোচনা শুরু হয়। তখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকার বেশি হবে নাকি কম, তা নিয়ে সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা চলে। ঈদের ছুটির পর ৬ এপ্রিল ও ৮ এপ্রিল তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুই দফা বৈঠক করা হয়েছিল। তবে ওই সময় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এরপর ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় ১৩ এপ্রিল। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণার পর থেকেই নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানায় সংগঠনটি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে কেন ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে সেসময় বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেছেন, এটা তারা করতে পারেন না। তারা যদি আগে ঘোষণা দেন, সেটা বেআইনি। এ ঘোষণার পরপরই বৈঠকের জন্য ডাকা হয় ব্যবসায়ীদের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তলব করে চিঠি পাঠিয়ে টিকে, মেঘনা, সিটি গ্রুপের প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছিল। চিঠি পাঠানো হয় ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং ভোজ্যতেল কারখানা মালিক সমিতির সভাপতির কাছেও। সে অনুযায়ী গতকাল তৃতীয় দফায় বৈঠক হলো। যে বৈঠকে ব্যবসায়ীদের দাম মেনেই দাম বাড়ানো হলো।
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, শিগগিরই দাম কমানোর চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পরিবর্তনের কারণে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা আগামী দিনে দাম কমানোর চেষ্টা করব। মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ভোজ্যতেলের আমদানি ও সরবরাহসহ সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভাশেষে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় উপদেষ্টা বলেন, বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কিনতে এখন খরচ হবে ১৮৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা। বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে শিল্পের জন্য গ্যাসের দাম বেড়েছে ৩৩ শতাংশ। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর শিল্প কারখানার মালিকদের মধ্যে চলছে ক্ষোভ। অর্থনীতির গতি কম, ব্যাংকঋণের সুদের চড়া হার, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, এসবের মধ্যে নতুন কারখানার জন্য বাড়ল গ্যাসের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্যাসের দাম নির্ধারণের এই প্রক্রিয়া শিল্পের জন্য বৈষম্য তৈরি করল। একই খাতে ব্যবসারত পুরোনো কারখানা কম দামে গ্যাস পাবে। নতুন কারখানাকে বাড়তি দাম দিতে হবে। ফলে নতুনেরা পুরোনোদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়বেন। এতে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে। পাশাপাশি দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় প্রভাব পড়বে যা অর্থনীতির জন্য বড় ক্ষতির সম্মুখিন হবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ঘোষিত গ্যাসের নতুন মূল্যহারকে বৈষম্যমূলক আখ্যায়িত করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি)। তারা বলছেন, সরকারের টেকসই ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহের যে লক্ষ্য রয়েছে তাতে পূর্ণ সমর্থন জানালেও বিইআরসি ঘোষিত প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্যহারের ফলে নতুন বিনিয়োগ ও শিল্প সম্প্রসারণ চরমভাবে বাঁধাগ্রস্ত হবে। বিইআরসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যমান গ্রাহকদের চেয়ে নতুন গ্রাহক, নতুন গ্যাস সেলস অ্যাগ্রিমেন্ট, অনুমোদিত লোডের চেয়ে অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহারকারী এবং প্রতিশ্রুত গ্রাহকদের বেশি মূল্য পরিশোধ করতে হবে, এমনকি তা একই খাতের কোম্পানি হলেও। এই দ্বৈত-মূল্য নীতি কেবল ন্যায্য প্রতিযোগিতার নীতিকে লঙ্ঘন করে না বরং প্রতিযোগিতামূলক এই বাজারে সকলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি অনিশ্চিত করে। ভিন্ন ভিন্ন মূল্যের যে মডেলটি বিইআরসি ঘোষণা করেছে তা নজিরবিহীন এবং এর কারনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। একই খাতে পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে আলাদা আলাদা জ্বালানি খরচের কারনে উৎপাদন খরচে পার্থক্য তৈরি হবে এবং এ ধরনের মূল্য কাঠামো সকলের জন্য সমান সুযোগ তৈরির নীতির পরিপন্থী। সর্বোপরি বাংলাদেশ সরকার যখন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে নানাবিধ পদক্ষেপ নিচ্ছে তখন শুধুমাত্র নতুন শিল্প কিংবা নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত একটি বিপরীতমুখী আচরণ। এধরনের সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করবে, ভবিষ্যৎ বিনিয়োগকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে এবং ইনভেস্টমেন্ট সামিটের মতো ইতিবাচক পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্জনকে ধ্বংস করবে।
ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, শিল্পের প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে একটি স্বচ্ছ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ জ্বালানি মূল্য নির্ধারণ কাঠামো আবশ্যক। আমরা জ্বালানির চাহিদা ও তা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বিইআরসিকে নতুন এই গ্যাসের মূল্য কাঠামো পুনঃবিবেচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের মতো বৃহৎ লক্ষ্যগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে নীতি নির্ধারণে দাবী জানাই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বেসরকারি খাতে ব্যাংকঋণের প্রবৃদ্ধি গত ফেব্রুয়ারিতে যে পর্যায়ে নেমেছে, তা গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন (৬ দশমিক ৮২ শতাংশ)। গত জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি সময়ে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে ২৫ শতাংশের মতো। শিল্প খাতে মেয়াদি ঋণ বিতরণও কমছে। ব্যাংকঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক করে দেওয়ার পর থেকে তা বাড়ছে। এখন ব্যাংকঋণের সুদহার ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোতে বেসরকারি খাতে প্রকল্প ঋণ কমেছে। সরকারি ও বেসরকারি খাতের শীর্ষ ১০টি ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যাংকগুলো গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে নতুন প্রকল্প এড়িয়ে চলছে। আগে অনুমোদন হয়েছে, রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এমন ঋণও স্থগিত করেছে কিছু ব্যাংক। এর মধ্যে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে প্রকল্প করতে আগ্রহ কম।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান গণমাধ্যমকে বলেন, একই পণ্যে উৎপাদনে দুই ধরনের গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে বৈষম্যবিরোধীদের হাতে গড়া সরকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করছে। বাজারে অনৈতিক প্রতিযোগিতা তৈরি করছে। বিনিয়োগ করা যাবে না, এমন বার্তা দেওয়া হচ্ছে। না হলে এত বড় বিনিয়োগ সম্মেলনের পর কীভাবে গ্যাসের দাম এভাবে নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) গণমাধ্যমে বলেন, সম্প্রতি এত বড় বিনিয়োগ সম্মেলনের পর কীভাবে গ্যাসের দাম এভাবে নির্ধারণ করা হয়। এটি দেশের জন্য ক্ষতি বয়ে আনবে। এভাবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে নতুন ইন্ড্রাস্ট্রি তৈরি হবে না। একইভাবে আগের শিল্প কারখানাগুলো অনেকাংশই বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে। এই খাতের প্রসার করতে চাইলে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি খাতকে শক্ত অবস্থানে নিতে হয় তাহলে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি তো দুরের কথা আগের দাম থেকেও কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবেই এই খাতের প্রসার সম্ভব।
প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, এমনিতেই সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে নাভিশ্বাস চলছে। আয়ের সাথে ব্যয়ের তফাৎ অনেক। নিন্ম ও মধ্যবিত্ত মানুষ কোনো রকমে বেঁচে আছে। এর মধ্যে সোয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কোনভাবে মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, এই সরকার তো নির্বাচিত না। তাই তাদের জবাবদিহিও করতে হচ্ছে না। জনগণের কাছে জবাবদিহি করা নির্বাচিত সরকার আসলেই কেবল নিত্যপণ্যের দাম দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। তিনি সোয়াবিন তেলের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের আহবান জানান। একইসাথে নতুন শিল্পখাতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধিকেও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন।
জা ই / এনজি