বিশেষ সংবাদদাতা
০৭ এপ্রিল ২০২৫
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা, ব্র্যান্ড কোম্পানি, খুচরা বিক্রেতা ও তাদের প্রতিনিধিদের কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন।
রোববার (৬ এপ্রিল) ইস্যু করা এই চিঠিতে সংকট মোকাবিলায় ক্রেতাদের যেকোনো পরামর্শ ও মতামত চাওয়া হয়। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে চিঠিতে বলা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক পারস্পরিক শুল্ক ঘোষণা, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি রপ্তানির ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক, আমাদের সবাইকে একটি অপ্রত্যাশিতভাবে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে ফেলেছে। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির জন্য যুক্তরাষ্ট্র একক বৃহত্তম দেশ। দেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে। তাই আকস্মিক পদক্ষেপের ফলে কেবল বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের মধ্যেই নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের মূল্যবান ক্রেতা সম্প্রদায়ের খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যেও গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
খোলা চিঠিতে আরও বলা হয়, আপনাদের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছে তা আমরা পুরোপুরি স্বীকার করি। এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যয় কাঠামো, সরবরাহ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। বাংলাদেশের সরকার ও বেসরকারি খাত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
চিঠিতে বলা হয়, অনেক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা তাদের বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। অনেকে এই শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করছে। তবে এই মুহূর্তে ব্যবসায়ীদের কাঁধে অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে অংশীদারদের ধৈর্য ও সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করা হয় খোলা চিঠিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানদের উদ্দেশে খোলা চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের পোশাক খাতকে টেকসই ও সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ খাতে রূপান্তরে যেভাবে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে পাশে রয়েছে, সেই সম্পর্কের ভিত্তিতে পারস্পরিক প্রচেষ্টায় এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনাদের দীর্ঘদিনের আস্থা আমাদের আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। আপনাদের অব্যাহত সমর্থন এবং কয়েক দশকের অংশীদারত্বের মাধ্যমে, আমরা আমাদের শিল্পকে কেবল বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলকই নয়, বরং আরও টেকসই এবং সামাজিকভাবে প্রভাবশালী করে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, বিশেষ করে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের জন্য, যাদের মধ্যে অনেকেই নারী, যাদের জীবিকা এই খাতের ওপর নির্ভর করে।
এই সময়কালে আপনাদের পরামর্শ এবং অন্তর্দৃষ্টি আমন্ত্রণ জানাতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি যে সংহতি এবং সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এই চ্যালেঞ্জগুলো কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হব বলে চিঠিতে বলা হয়েছে।
টি আই / এনজি