সন্ধ্যা ৬:৩৯ | সোমবার | ১৪ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

মন্তব্য অমিত শাহের : ‘বিচ্ছিন্নতাবাদ ইতিহাসে পরিণত হচ্ছে কাশ্মিরে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৫ মার্চ ২০২৫

ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদ এখন ইতিহাসে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় এ মন্তব্য করেছেন তিনি।

জম্মু-কাশ্মিরের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়া রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীগুলো অল পার্টি’জ হুরিয়াত কনফারেন্স নামের একটি রাজনৈতিক জোটে অন্তর্ভুক্ত। এই জোটে প্রায় ২৬টি দল ও গোষ্ঠী রয়েছে। এই জোটের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

সম্প্রতি হুরিয়াত কনফারেন্স জোটের দু’টি দল জানিয়েছে, তারা জম্মু-কাশ্মিরকে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে দেখতে ইচ্ছুক। জোট থেকে বেরিয়েও এসেছে তারা।

এ তথ্যকে ‍উপজীব্য করেই এক্সবার্তা দিয়েছেন অমিত শাহ। বার্তায় তিনি বলেন, “কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদ এখন ইতিহাসে পরিণত হচ্ছে। হুরিয়াত কনফারেন্সের অন্তর্ভুক্ত দুই সংগঠন জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আমি তাদের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে এমন ভাবাপন্ন সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে ভারতের ঐক্যকে দৃঢ় করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বানও জানাচ্ছি।”

১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের সময় থেকে কাশ্মির সংকটের শুরু। দুই রাষ্ট্রের সীমানা নির্ধারণের সময় জম্মু-কাশ্মির কোন রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হবে— জম্মু-কাশ্মিরের শেষ রাজা হরি সিংয়ের কাছে তা জানতে চেয়েছিলেন ব্রিটেনের শাসকরা। কিন্তু বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে হরি সিং জানিয়েছিলেন, জম্মু-কাশ্মির স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে থাকবে; কোনো দেশের অংশ হবে না।

কিন্তু ১৪ আগস্ট স্বাধীনতা লাভের পর জম্মু-কাশ্মির দখলে অভিযান শুরু করে পাকিস্তান এবং কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের অনতিদূরে পৌঁছে যায়। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মিরের রাজা হরি সিং জম্মু-কাশ্মিরের ভারতে অন্তর্ভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করেন।

হরি সিংয়ের স্বাক্ষরের পর অভিযানে নামে ভারতের সেনাবাহিনী এবং পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। সেই থেকে জম্মু-কাশ্মিরের মোট ভূখন্ডের ৪৩ শতাংশ ভারতের এবং ৩৭ শতাংশ পাকিস্তানের দখলে রয়েছে। বাকি ২০ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে চীনের হাতে। চীনের অধিকৃত ওই অঞ্চলটি সিয়াচেন নামে পরিচিত।

ভারতে অন্তভুক্ত হওয়ার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু জম্মু-কাশ্মিরকে বিশেষ স্বায়ত্বশাসিত রাজ্যের মর্যাদা দিয়েছিলেন। ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারায় এ সম্পর্কে বলা হয়েছিল, জম্মু-কাশ্মিরের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কখনও হস্তক্ষেপ করতে পারবে না এবং ভারতের অন্য কোনো রাজ্যের লোকজন বা কোনো বিদেশি জম্মু-কাশ্মিরে জমি বা সম্পত্তি ক্রয় করতে পারবে না।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট পার্লামেন্টে কণ্ঠভোটের মাধ্যমে ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মিরকে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় আসীন তৎকালীন বিজেপি সরকার।

 

 

সূত্র : এনডিটিভি/ শই / এনজি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *