আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৯ এপ্রিল ২০২৫
মিয়ানমারে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ইয়াঙ্গুনের ব্যস্ততম চায়না টাউনের প্রাণকেন্দ্রে ‘সিংহ নাচ’ পরিবেশনের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করছেন দেশটির তরুণরা। ফেং ই ড্রাগন ও লায়ন ড্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের ৩০ জনেরও বেশি তরুণের একটি দল চলতি মাসের ৩ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত অভিনব এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
এ কার্যক্রমে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন বলে জানান তারা। ওই তরুণরা বলেন, অনেক পথচারীই তাদের নাচে আকৃষ্ট হয়েছেন এবং উৎসাহ দিয়েছেন।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে দলটি মিয়ানমারের মুদ্রায় ৫০ লাখ কিয়াট (প্রায় ২ হাজার ৩৮০ মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে তারা।
ভূমিকম্পে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে দলটির সদস্যরা বলেন, সংগৃহীত অর্থ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মান্দালয় ও সাগাইং শহরে বাসিন্দাদের সহায়তায় ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
লায়ন ড্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মিয়ো মং মং মিন্ট (৩৫) বলেন, তহবিল সংগ্রহ ও জরিপ শেষে বাসিন্দাদের সরাসরি সহায়তা করতে আমরা সেখানে যাবো। তাদের কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন বা কোনটি আগে প্রয়োজন সেটি জানতে আগেই একটি জরিপ করেছি আমরা।
ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের এই অর্থ দিয়ে সহায়তার পাশাপাশি পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে বলে জানান মিয়ো।
অ্যাসোসিয়েশনের আরেক সদস্য বলেন, এভাবে তহবিল সংগ্রহ করা মোটেও সহজ কাজ নয়। বিশেষত রোদের মধ্যে সিংহ নাচের পোশাক পরে নাচ করা বেশ কঠিন। তবে আমরা এতে অভ্যস্ত।
তিনি জানান, এই পোশাক পরে নাচের কারণেই মানুষ আলাদাভাবে তাদের লক্ষ্য করে। ফলে অর্থ সংগ্রহে এটি তাদের সহায়তা করেছে।
তিনি বলেন, এই দুর্যোগে আমি দেশের মানুষকে সহায়তা করতে চাই, কিন্তু আমার একার পক্ষে এটি সম্ভব নয়। দলের সঙ্গে কাজ করায় এটি আমাকে আরও শক্তি জুগিয়েছে, তাছাড়া তহবিল সংগ্রহেও কার্যকরী হয়েছে।
অনুদান দেওয়া ৪৫ বছর বয়সী নারী এনওয়ে নওয়ে বলেন, প্রথমে আমি শুধু অল্প কিছু অর্থ দেবো ভেবেছিলাম। কিন্তু তাদের চেষ্টা দেখে আমি আরও বেশি অর্থ দিয়েছি।
এভাবে তহবিল সংগ্রহ করার সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার মানসিকতা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরায় এই উদ্যোগ বিশেষ গুরুত্ব তৈরি করেছে। তারা দেখিয়েছেন, কীভাবে সংকটের সময় তরুণরা একসঙ্গে কাজ করে সহায়তা করতে এগিয়ে আসতে পারে।
মিয়ানমারের সরকারি তথ্যমতে, দেশটিতে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬৪৫ জনে, আহত হয়েছেন ৫ হাজার ১৭ জন। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন ১৪৮ জন।
সূত্র: শিনহুয়া, ইউএনবি / এনজি