নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
২৬ অক্টোবর ২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের আওলিয়ানগর মোহাম্মদীয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হক আল আজাদ এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, যৌন হয়রানী ও ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে এলাকাবাসী। আজ ২৬ অক্টোবর শনিবার দুপুরে মাদ্রাসা মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে তারা অধ্যক্ষের স্থায়ী বহিষ্কার ও শাস্তির দাবী করে।
বিশিষ্ট সমাজকর্মী মোঃ ইসমাইল সরকার সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এসময় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি এবং মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
সাংবাদিক সম্মেলন থেকে অভিযোগ করা হয় যে, মাদ্রাসার উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ তহবিলের তসরুপ, ১৮ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রাপ্য টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি, প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য আয়ের টাকা মাদরাসার কাজে ব্যয় না করে তিনি নয়-ছয় করেছেন। শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য, যৌন হয়রানীমূলক আচরণ, দুর্নীতি ও অশিক্ষকসূলভ আচরণ প্রভৃতি কর্মকাণ্ড করে তিনি ৫ আগষ্টের পর থেকে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং মাঝখানে একদিন মাদারাসা অফিসে এসে একটি পদত্যাগপত্র রেখে চলে যান।
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দুর্নীতি এবং দায়িত্বহীন আচরণে মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে, যা অবিলম্বে রোধ করা প্রয়োজন। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন যেন দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতাপূর্ণ প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়।
তারা আরও অভিযোগ করেন, ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানের দুই মাসের ওপর সময় গড়িয়ে গেলেও প্রশাসন বহুল সমালোচিতএই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মাদ্রাসায় না এসেও অধ্যক্ষ কীভাবে বেতন উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছেন এ প্রশ্নও রাখেন তারা। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের এবং মহিলা শিক্ষকদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ আচরণেরও অভিযোগ করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২০১১ সালে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. আশরাফুল আলম দুর্নীতি প্রমাণ সাপেক্ষে ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যক্ষ আব্দুল হক আল আজাদ এর বিরুদ্ধে মাদ্রাসার প্রায় ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ তোলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, এসিল্যান্ডকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে, তারা রিপোর্ট প্রদানের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজয়নগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মুজাহেরুল হক জানান, তদন্ত রিপোর্টগুলো আমাদের হাতে এসেছে। আমরা একটা শুনানির ব্যবস্থা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
জা ই / এনজি