নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ মার্চ ২০২৫
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন দেরিতে হলে ফ্যাসিস্ট শক্তি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় সংষ্কার শেষে অবিলম্বে নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ চাই।
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিনের সভাপতিত্বে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব এই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।। সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের নিয়ে ইফতার করেন।
নির্বাচনের আগে সংষ্কার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এখন যেটা চাইছি, অত্যন্ত আন্তরিকভাবে চাইছি যে, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমরা সবাই মিলে দায়িত্ব দিয়েছি তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যে যেটা আমরা বার বার করে বলেছি, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে সমস্ত সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সেই সংস্কারগুলো করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিকে যাবেন। কারণ আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি অতীত অভিজ্ঞতা থেকে, যত দেরি হবে তত বেশি আবার বাংলাদেশে পক্ষের শক্তিকে পরাজিত করবার জন্য বিরুদ্ধ শক্তি-ফ্যাসিস্ট শক্তিরা আবার মাথাচাড়া দিতে শুরু করে দেবে। তারা শুধু নয় একই সঙ্গে যারা জঙ্গি মনোভাব পোষন করে থাকেন, যারা উগ্র মনোভাব পোষন করে থাকেন, তারাও এই সুযোগগুলো নেয়ার চেষ্টা করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একটা ভয়াবহ দানবীয় পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসেছি। আজকে সেখানে আমাদেরকে একটু ধর্য্য ধারণ করতে হবে। আমরা পত্রিকার পাতা খুললেই আমরা বিচলিত হয়ে পড়ি যে আবার সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে যে, হত্যা-খুন-জখম-ধর্ষণ এগুলো এমন একটা জায়গায় চলে যাচ্ছে বিধায় এগুলো আমাদেরকে সকল উৎপীড়িত করছে। অন্যদিকে আমরা দেখছি যে, ইয়াং জেনারেশন আমাদের ছ্ত্রারা অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। আবার দেখছি যে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, অর্গানাইজেশনগুলো আছে তাদের কর্মীরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নেমে এসছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যত দ্রুত নির্বাচন হবে, যত দ্রুত জনগনের প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে আসবে, পার্লামেন্টে এসে একদিকে তারা দেশ পরিচালনা করবেন অন্য দিকে অন্য যে বাকি যেসব প্রয়োজনীয় সংস্কার আছে, সেগুলো আমরা এক সাথে করতে পারব।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলতে চাই, উই আর কমিটেড টু রিফর্মস, সংস্কারের ব্যাপারে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ৩১ দফা দুই বছর আগে দিয়েছি যে সংস্কারের কথা কেউ বলেনি। সেই সংস্কারগুলো আজকে উঠে এসছে যার সাথে খুব একটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে না। সেজন্য আমরা মনে করি যে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করা উচি। নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব আসলে দেশে স্থিতিশীলতা রক্ষা হবে।
বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, গত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে সাংবাদিকরা সত্য প্রকাশ করতে পারেনি। এখন সময় এসেছে সত্য প্রকাশিত করার। আমরা সত্য-মিথ্যার সংমিশ্যণে সাংবাদিকতা চাই না। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার সুযোগ চাই। তিনি বলেন, সুযোগ এসেছে, দেশ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে সত্য ও ন্যায় সংবাদ তুলে ধরার। আমরা কারো দলদাসে পরিণত হতে চাই না। ফ্যাসিস্ট সাংবাদিকদের মতো পদলেহনকারী হতে চাই না।
অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, দৈনিক নয়াদিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আজম মীর শাহিদুল আহসান, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএনপি নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদলি আহমেদ ও ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, এলাহি নেওয়াজ খান সাজু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, সরদার ফরিদসহ বিএফইউজের দেশব্যাপী থাকা ১৯টি সংগঠনের নেতবৃন্দ অংশ নেন।
জা ই/ এনজি