রাত ৩:১৯ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপি : রাষ্ট্রপতির পদে শূন্যতা এ মুহূর্তে রাষ্ট্রীয় সংকট ও সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ অক্টোবর ২০২৪

 

 

রাষ্ট্রপতির পদে শূন্যতা এ মুহূর্তে রাষ্ট্রীয় সংকট ও সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করবে বলে মনে করে বিএনপি। রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন সংগঠনের আন্দোলনের মধ্যে আজ বুধবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠক করে বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠক শেষে গুলশানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রীয় সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যদি গণতন্ত্র উত্তোরণের পথটা বিলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত কিংবা কণ্টাকাকীর্ণ হয়, সেটা জাতির কাম্য হতে পারে না।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে রাষ্ট্রপতির প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতির পদটি একটি সাংবিধানিক পদ, একটি প্রতিষ্ঠান- সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। এই পদে হঠাৎ করে পদত্যাগের মাধ্যমে শূন্যতা সৃষ্টি হলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হবে, রাষ্ট্রীয় সংকটের সৃষ্টি হবে।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যদি গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথটা বিলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত কিংবা কণ্টাকাকীর্ণ হয়, সেটা জাতির কাম্য হতে পারে না। সুতরাং পতিত ফ্যাসিবাদ এবং তাদের দোসররা যাতে কোনো ষড়যন্ত্র করে এখানে অন্য কিছুর পাঁয়তারা করতে না পারে, সেজন্য আমরা সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি এবং ঐক্যবদ্ধভাবেই সমস্ত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করব।

বিএনপি এখন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ কিংবা অপসারণ চায় কি না, এমন প্রশ্নে দলটির এই নীতিনির্ধারক বলেন, রাষ্ট্রপতির পদে শূন্যতা এই মুহূর্তে রাষ্ট্রীয় সংকট সৃষ্টি করবে, সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করবে- যেটা জাতির কাম্য নয়। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রিয়াজ উদ্দিন নসু, দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদের বহন করা প্রাইভট কার প্রবেশ করে বেলা সাড়ে ১১টায়। বেলা সাড়ে ১২টায় বেরিয়ে আসেন তারা। সেখানে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সাথে আমরা দেখা করতে এসেছিলাম। আমরা দেখছি যে, পতিত ফ্যাসিবাদ এবং তাদের দোসররা নানা কৌশলে নানাভাবে দেশে রাজনৈতিক এবং সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি, দীর্ঘদিন লড়াই করে বহু সাথীর রক্তের বিনিময়ে আমরা যে পরিবর্তন অর্জন করেছি এই পরিবর্তন সুরক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্যে আমাদের জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় করা দরকার।এখানে সব রাজনৈতিক দল, শ্রেনী-পেশাসহ ছাত্রদের সংগঠনের সবার একটা দৃঢ়তর ঐক্য গড়ে তোলা দরকার যাতে কেউ কোনো ভাবে দেশে কোনো নতুন করে সাংবিধানিক কিংব রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে না পারে এই ব্যাপারে আমাদের সবাইকে হুঁশিয়ার থাকতে হবে।

তিনি বলেন, সংস্কারের যে কাজ চলছে এটা দ্রুততর করা এবং ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সেই সংস্কারগুলো করা, জনগনের চলমান সংকটগুলো দ্রুত নিরসন করা এবং আল্টিমেটলি এই আন্দোলনের মূল আকাংখা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আর আমরা এটাও আলোচনা করেছি যে, পতিত স্বৈরাচারের দোসরা যদি কোনো সাংবিধানিক সৃষ্টির অপপ্রয়াস অপপ্রয়াস করে তাহলে আমরা গণতন্ত্রকামী এবং আন্দোলনরত যেসব রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবেই সেটা মোকাবিলা করব ইনশাল্লাহ। দেশের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে সরকারকে আরও তৎপর হতে বলা হয়েছে বলে জানান বিএনপির এই নেতা।

রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশে যাতে কোনো রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সবার খেয়াল রাখার কথা হয়েছে এবং যেটা যদি কেউ করতে চায় তাহলে আমরা সবাই মিলে সেটা মোকাবিলা করব। তবে অপসারণের বিষয়ে বিএনপি কিছু বলেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

 

জা ই / এনজি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *