শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আবরার বলেছেন, আমাদের বুদ্ধিভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ করতে হলে বইপড়ার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। একটি বইপড়ুয়া সমাজ আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশন ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবসটি সারা বিশ্বের বইপ্রেমীরা বিশেষভাবে উদযাপন করেন। বইপড়া, বই ছাপানো, বইয়ের কপিরাইট সংরক্ষণ করা ইত্যাদি বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে ২৩ এপ্রিল ইউনেসকোর উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ জ্যেষ্ঠ সচিব ও বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র অনেক বছর ধরে আমাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে বইপড়া কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সরকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে মাধ্যমিক পর্যায়ে বইপড়া কার্যক্রমে যুক্ত ছিল। আশা করছি, এ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সারাদেশে শিগগির শুরু হবে এবং তা চলমান থাকবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ বলেন, আমাদের মধ্যে কপিরাইট বিষয়ে সচেতনতা কম। ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে কপিরাইটের সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতির মেলবন্ধনে আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস, কপিরাইট রেজিস্টার, (যুগ্ম-সচিব) (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মিজানুর রহমান বলেন, পৃথিবীর অন্য অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশে সৃজনশীল মানুষের মধ্যে কপিরাইটের নিবন্ধন করার প্রবণতা কম। এ বিষয়ে কপিরাইটের নিবন্ধন করার জন্য সৃজনশীল মানুষদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, শিক্ষা হচ্ছে আমাদের জাতীয় মুক্তির সবোর্চ্চ মাধ্যম। বইপড়ার মাধ্যমে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে কথা বলা যায়। বই মানুষকে জীবন অতিক্রম করতে শেখায়। তিনি বাংলাদেশে পাঠক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বইমেলার প্রবর্তক চিত্তরঞ্জন সাহার অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন এবং আগামী বছর গুলোতে সমগ্র বাংলাদেশে বই পড়া কার্যক্রমে অন্তত ৫০ লক্ষ পাঠক এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশন ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মিজ জুবাইদা মান্নান স্বাগত বক্তব্যে বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম-পরিচালক (প্রোগ্রাম) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।
দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভার পাশাপাশি কেন্দ্রের প্রকাশনা বিভাগের সব বইয়ের ওপর সপ্তাহব্যাপী (২৩ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত) বিশেষ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কুমিল্লা ও খাগড়াছড়িসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ বইমেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জ উ / এনজি