জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ ও সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। অন্যদিকে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মাঠে নেমে পড়েছে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নিবন্ধন না পেলেও দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটের মাঠে অবস্থান জানান দিতে নিজ নিজ এলাকা ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজা উদ্দিন বলেন, যারা ভোটের রাজনীতি করবেন তারা তো মাঠে-ঘাটে ঘুরে বেড়াবেন। আমাদের নেতৃত্বও সেটি করছে। তারা মানুষের যথেষ্ট সাড়াও পাচ্ছেন। বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে নির্বাচনী একটি আমেজ বিরাজ করছে। তারা সার্বিক সহযোগিতা করছেন।

মাঠের রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিবন্ধকতা থাকবে— উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন লড়াই-সংগ্রামে ছিলাম, একসঙ্গেই করেছি। তখন কেউ আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবেনি। কিন্তু এখন যখন মাঠে যাচ্ছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আমাদের বাধা দিচ্ছে, অনেকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছেন। এটি কিন্তু স্বাভাবিক, আমরা বিষয়টি পজিটিভ হিসেবে দেখছি। একইসঙ্গে আমরা নতুন দল হিসেবে রাজনৈতিক কাঠামো, পলিসি ও গঠনতন্ত্র তৈরি এবং দলের নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিশাল জমায়েতের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে এনসিপি। ওই দিন আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। গত ৪ মার্চ সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং রায়েরবাজারে চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি পালন শুরু করে এনসিপি। এরপর নিয়মিত তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা। সেক্ষেত্রে এনসিপির ভাবনায় রয়েছে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বিভিন্ন দলের প্রভাবশালী জনপ্রিয় নেতা। যাদেরকে সহজে দলে ভিড়িয়ে প্রার্থী করা যাবে। যদিও নির্বাচনের সময় এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, আগামী ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘তার (প্রধান উপদেষ্টা) বক্তব্যে আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই।’
নির্বাচনের নির্ধারিত সময় ২০২৬ সালের জুন ধরা হলেও সেই হিসেবে হাতে সময় তেমন নেই। এ সময়ের মধ্যে এনসিপির নিবন্ধন, সংবিধানসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কার এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়গুলো দ্রুত শেষ করতে চায় দলটি।
পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১১৩টির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে নবীন এ রাজনৈতিক দল। তারা বলছে, যে সুপারিশগুলো সংবিধানের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, সেগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আর সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কারের বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন দরকার বলে মনে করেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কার সমন্বয় কমিটির কো-অর্ডিনেটর সারোয়ার তুষার
নির্বাচনের আগে দলের নিবন্ধন দ্রুত শেষ করা প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন। তারা সমস্যা জানার চেষ্টা করছেন। আমাদের হাতে কম সময় আছে ঠিকই, তবে দলের নিবন্ধন দ্রুত সম্পন্ন করতে যা যা করণীয় তা নিয়ে কাজ চলছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, এনসিপির ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিতে হলে নতুন দলের নিবন্ধন নেওয়ার বিকল্প নেই। নিবন্ধনের বিষয়ে অতি অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বরাবর আবেদন করার পরিকল্পনার কথা বলছেন দলটির তরুণ নেতৃত্ব। তবে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ- ১৯৭২ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে হলে দলটির একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কার্যালয় এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা বা ক্ষেত্র-অনুযায়ী মেট্রোপলিটন থানা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এছাড়া নিবন্ধনের জন্য বিবেচিত হতে হলে দলের গঠনতন্ত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বিধান স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। এসব বিষয় দ্রুত নিষ্পত্তি করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু করেছে এনসিপি।
এদিকে, পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১২৯টির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে নবীন এ রাজনৈতিক দল। গতকাল শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তারা এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান।
দলটির নেতৃবৃন্দ বলছেন, যে সুপারিশগুলো সংবিধানের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, সেগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আর সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কারের বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন দরকার বলে মনে করেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কার সমন্বয় কমিটির কো-অর্ডিনেটর সারোয়ার তুষার।
এনসিপির নির্বাচনী সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে আজ (২০ এপ্রিল) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠকের বিষয়ে নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দিতে সশরীরে আসার বিধান করা, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনের সার্টিফিকেশন ইসি থেকে দেওয়া, প্রার্থীদের হলফনামা তদন্ত করে তার সত্যতা নিরূপণ করা, নির্বাচনী সহিংসতা রোধে আচরণবিধি ও ব্যয়ের বিধিতে পরিবর্তন আনা, ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া বন্ধ করা, হলফনামায় ভুল তথ্য থাকলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল এবং নির্বাচিত হলেও যেন তারা সংসদে থাকতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য সময় বাড়ানো, রাজনৈতিক দলগুলো যেন অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চা করে তা মনিটরিং করার কথা জানান। এছাড়া একই নামে দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে কিন্তু অফিস নেই তাদেরও নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। তাই প্রত্যেক দলকে নতুন করে নবায়ন করা এবং সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে রোডম্যাপ ঘোষণার আগেই নির্বাচনের পথে ডিসেম্বরকে মাথায় রেখে ইসির তৎপরতায় ‘সন্দেহ’ প্রকাশ করেন এনসিপির এ মুখ্য সমন্বয়ক।
নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে এনসিপির নেতারা বলছেন, তরুণদের পাশাপাশি ক্লিন ইমেজের সব বয়সী প্রার্থীকে তারা বিবেচনায় রাখছেন। সেক্ষেত্রে অন্য দল থেকে আসা যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টিও রয়েছে। সম্প্রতি এনসিপির জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের ন্যূনতম বয়স ৪০ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রার্থী বাছাই ও দলকে শক্তিশালীর করার লক্ষ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের বিষয়েও ভাবছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের সঙ্গে দেখা করে নিজের প্রার্থিতা জানানও দিচ্ছেন কেউ কেউ।
নির্বাচনী মাঠে আছেন যারা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে নির্বাচনী মাঠে নিজেদের সরব উপস্থিতির জানান দিয়েছেন এনসিপির একাধিক নেতা। তাদের মধ্যে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা-১১ (রামপুরা-বনশ্রী) আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানা গেছে। এছাড়া দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন রংপুর-৪ আসন এবং মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) অথবা ঢাকার যেকোনো একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ভোলা-১, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম কুষ্টিয়া-১, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনীম জারা ঢাকা-১৭ (গুলশান-ক্যান্টনমেন্ট এলাকা) আসন থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি হাতিয়ার ফেরিঘাট চালুসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। সম্প্রতি বিশাল গাড়িবহর নিয়ে তিনি ভোটের মাঠে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন।

দলটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক এস এম শাহরিয়ার ঢাকা-৫, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আরিফুল ইসলাম আদীব ঢাকা-১৪, যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন ঢাকা-৯, সংগঠক মো. রাসেল আহমেদ ঢাকা-১, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দীন মাহাদী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্র ইউনিয়নের নেতা অনিক রায় সুনামগঞ্জ-২, যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন পটুয়াখালী-২, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী নাছের খান গাজীপুর-১, যুগ্ম সমন্বয়কারী আরিফুর রহমান তুহিন ঝালকাঠি-১, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ কুড়িগ্রাম-১, যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজা উদ্দিন কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
মুখ্য সংগঠক অলিক মৃধা টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসন, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু খুলনা-১, যুগ্ম সদস্য সচিব মীর আরশাদুল হক চট্টগ্রাম-১৬, যুগ্ম সদস্য সচিব মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান চুয়াডাঙ্গা-১, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার টাঙ্গাইল-৩, মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ মাহমুদ খান গাজীপুর-৩, মুখ্য সংগঠক আবু সাঈদ লিওন নীলফামারী-৩, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু বরিশাল-৫, সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল ভোলা-৪, হাসান আলী চট্টগ্রাম-১৪, নির্বাহী সদস্য ফাহিম রহমান খান পাঠান নেত্রকোনা-২ আসন থেকে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এদিকে, পবিত্র রমজান মাসে বিশাল গাড়িবহর নিয়ে এলাকায় শোডাউন দেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। বিষয়টি ভালোভাবে নেননি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন করতে যায়, তারা কী করবে, সেটা আমরা ভালো বুঝি।’ সারজিস আলমের গণসংযোগ ও প্রচারণা নিয়ে নানামুখি সমালোচনার পর নতুন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ভ্যানে করে নিজ আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন। বিষয়টি সাধারণ মানুষের প্রশংসা কুড়ায়।
অন্যদিকে, দেবীদ্বার উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৪ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। গত কয়েক মাস ধরে এলাকায় বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন তিনি। সর্বশেষ উপজেলার সুজাত আলী সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাসনাত বলেন, ‘সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দেবীদ্বার আসনটিকে এনসিপির একক আসন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’ নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে তিনি এবারের ঈদ উদযাপন করেছেন বলেও জানা যায়।

নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো কাজ শুরু করিনি। তবে, অনেকেই নিজ উদ্যোগে এমপি হওয়ার জন্য গণসংযোগ চালাচ্ছেন। এটা তিনি করতেই পারেন। তবে, আমরা এখনও আমাদের মূল লক্ষ্য থেকে পিছপা হইনি। জুলাই আন্দোলন ঘিরে সাধারণ মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল; সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক যে সংস্কার; সেটি নিশ্চিত করা। বিশেষ করে যে অত্যাচার ও নিপীড়ন সাধারণ মানুষের ওপর চালানো হয়েছে, তার বিচার নিশ্চিত করা।’
‘তবে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল আমাদের বাধ্য করছে নির্বাচনী আলোচনায় যেতে; পোস্টারিং ও লিফলেট বিতরণ করতে।’
এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজা উদ্দিন বলেন, ‘আমরা গণমানুষের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা বিভিন্ন অংশীজনের কাছে যাচ্ছি, মাঠে-ঘাটে যাচ্ছি। জেলা থেকে থানা— সর্বত্র আমাদের নেতাকর্মীরা যাচ্ছেন, বিভিন্ন জায়গায় তারা বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। তারপরও আমরা আমাদের ওপর অর্পিত যে দায়িত্ব জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার বাস্তবায়ন, সেটি সম্পন্ন করব।’
জা ই / এনজি