দুপুর ১:০৯ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দেশে জনগনের ক্ষমতা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ অক্টোবর ২০২৪

 

দেশে জনগনের ক্ষমতা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকার ঘোষণা পুন: ব্যক্ত করেছেন তারেক রহমান।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে দুর্গা পূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়কে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই প্রত্যায় ব্যক্ত করেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ধর্ম বিষয়ক সহ সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, আফরোজা খানম রীতা, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম জামাল, জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, অপর্না রায় দাস, সুশীল বড়ুয়া, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, তুরন দে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। পরে অতিথিদের প্রসাদ দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

তারেক রহমান বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে একাত্তর সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ আর হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে ২৪ সালের দেশ ও জনগনের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ সব ক্ষেত্রেই গণতন্ত্রকামী জনগন বিজয়ী হয়েছে। সুতরাং হাজার হাজার আহত মানুষের আত্মচিৎকার, হাজারো লাখো শহীদের রক্তস্নাত জমিনে আমাদের মধ্যে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, যেকোনো মূল্যে আমাদেরকে সেই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, জনগনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা গেলে কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র করে আর কেউ আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে সক্ষম হবে না। আমি বলতে চাই, জনগনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আমাদের একটিই বার্তা, বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী, সংশয়বাদী কিংবা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠি এই বাংলাদেশ আপনার-আামার, আমাদের সবার। তথাকথিত সংখ্যালুঘু কিংবা সংখ্যাগুরু নয়, এই জাতি রাষ্ট্রের আমাদের একটাই পরিচয়, আমরা সকলে বাংলাদেশী।

তারেক রহমান বলেন, এই দেশের নাগরিক হিসেবে আপনার যতটুকু অধিকার আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার। আমাদের সবার কাছে সবার আগে দেশের স্বার্থই হবে সবচাইতে বড়। রাষ্ট্র-রাজনীতি, শাসন-প্রশাসন পরিচালনায় আমরা গুরুত্ব দেবো মেরিটোক্রেসীকে। এদেশের সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে এই বিএনপির নীতি এটাই বিএনপির রাজনীতি। সকলকে নিজেদের অধিকার আদায় এবং দায়িত্ব কর্তব্য পালনে সর্তক থাকার আহ্বানও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

গুজবে কান দেবেন না মন্তব্য করে গত ১৫ বছরে মাফিয়া সরকারের শাসনামলে হিন্দুসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর অন্যায়-অত্যাচারের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ভবিষ্যতে যাতে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ ধর্মীয় রীতিনীতি নিশ্চিন্তে নিরাপদে উদযাপন করতে পারেন, তেমন একটা রাষ্ট্র এবং সমাজ বিনির্মানের জন্যই বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ। সকলের উদ্দেশ্যে আমাদের বার্তা একটিইৃ ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার। সুতরাং আপনাদের প্রতি বিনীত আহ্বান, পলাতক স্বৈরাচারের পৃষ্ঠপোষক এবং তাদের দোসরদের কোনো উস্কানিতে দয়া করে পা দেবেন না, কোনো গুজব, গুঞ্জনে দয়া করে কান দেবেন না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পর একটা নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে, সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারিনি। এবার ৫ আগস্টের পর আবার একটা নতুন সম্ভাবনা এসেছে, আসুন আমরা সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলি। আসুন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা জাতীয়তাবাদীতে বিশ্বাসী, সকলে মিলে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। ধর্ম যার যার দেশটা আমাদের সকলের। ৫ আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর একটা প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে, আসুন আমরা সবাই মিলে একটি ঐক্যবদ্ধ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠন করি।
মির্জা আব্বাস বলেন, আগে হিন্দুদের পূজার সময় কোনো মন্দির পাহারা দিতে হতো না, এখন দেখি এসব! কেন? কোনো মুসলমান হিন্দুদের মন্দির ভাঙতে পারে না, কোনো ধর্মে এমন নেই। এটি কে করছে? যত ধরা পড়ছে সব আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ আর যুবলীগ। আমার এলাকায় যত হিন্দুদের জমি দখল করেছে সব আওয়ামী লীগের নেতা।

ড মঈন খান বলেন, মা আসেন প্রতি বছর ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য। ৫ আগষ্ট এদেশ থেকে অসুর পালিয়ে গেছে। সত্যের জয় হয়েছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা একটি রেইনবো জাতি গঠন করতে চাই, এটি বিএনপির দর্শন, চিন্তা থেকে এর প্রতিফলন। এটি নিয়ে বিএনপির চেয়ারপাসঅন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চিন্তার প্রতিফলনে কোনো সন্দেহ নেই। ধর্মকে মূলধন করে অনেকে নেতা হয়ে যান, তারা নিজেরা লাভবান হচ্ছেন, এমনকি যাদের নিয়ে লাভবান হচ্ছেন তাদের নিয়ে কোনো ভাবনা নেই এই ধর্ম ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপিতে গোত্র ধর্ম নির্বিশেষে সবাই সমান। এটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দল।

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *