বিকাল ৩:২০ | শনিবার | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দলের জরুরি স্থায়ী কমিটির বৈঠক : পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির প্রসার ঘটবে মনে করে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

 

 

দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয় এই বৈঠক। শেষ হয় দুপুর ১টায়।

বৈঠকে অংশ নেওয়া সবাই গুলশান কার্যালয়ে বসেন এবং তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

দলীয় সূত্র জানায়, বুধবার ও বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘর-বাড়ি, স্থাপনা ও নামফলক ভেঙে ফেলার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দলের করণীয় নির্ধারণে লন্ডন সময় ভোর সাড়ে ৫টায় দলের নীতিনির্ধারকের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন তারেক রহমান। সাধারণত প্রতি সোমবার লন্ডন সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়) স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন তারেক রহমান।
বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস (অনলাইনে), গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ডক্টর আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (অনলাইনে), আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী (অনলাইনে), সালাউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (অনলাইনে), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন (অনলাইনে)।

বৈঠকের বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, দেশের চলমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। বর্তমান অবস্থায় আমরা বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় অবস্থান জানিয়েছি। আরো যেসব সিদ্ধান্ত সেগুলো সামনে আসবে।

জানা গেছে, বৈঠকে পতিত স্বৈরাচারের উস্কানিমূলক বক্তব্যে জনমনে তীব্রক্ষোভে সারাদেশে সংঘটিত ঘটনাবলীতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। স্থায়ী কমিটি পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। বিএনপি মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির প্রসার ঘটবে। সুতরাং কঠোরভাবে আইন শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্র ও সরকারের ভূমিকা দৃশ্যমান করা এখন সময়ের দাবি।

স্থায়ী কমিটি মনে করে বিতাড়িত পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের উস্কানিমূলক আচরণ, জুলাই আগস্টের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে অশালীন এবং আপত্তিকর বক্তব্য মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং ক্রোধের জন্ম দিয়েছে। এসময় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ৬ মাসেও পলাতক স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরদেরকে আইনের আওতায় আনতে যথেষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ জনসম্মুখে দৃশ্যমান করতে সফল হয়নি বলে জনমনে প্রতিভাত হয়েছে। ফলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার মতো বেআইনী কর্মকান্ডে উৎসাহিত হচ্ছে। এখনও প্রশাসনকে পতিত ফ্যাসিস্ট শাসকের দোসরমুক্ত করা হয়নি, বিচার বিভাগে কর্মরত ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও বিদ্যমান, পুলিশ প্রশাসনে গণঅভ্যুত্থানবিরোধী সক্রিয় সদস্যরা এখনও কর্মরত। এমতাবস্থায় সরকার জনআকাঙ্খা পূরণে সফলতা অর্জন করতে পারবে কিনা তা যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক করে বৈঠকে। বৈঠকে দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের দাবি পুনরুল্লেখ করে বলা হয়, জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খাকে ধারণ করে মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাশীঘ্র সম্ভব একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *