রাত ৪:২৩ | বৃহস্পতিবার | ১৭ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি)’ এবং জামায়াতে ইসলামীর কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন বরকত উল্লাহ বুলুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ মার্চ ২০২৫

 

 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের গঠিত ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি)’ এবং জামায়াতে ইসলামী কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বরকত উল্লাহ বুলু।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এই প্রশ্ন তুলেন।

তিনি বলেন, ‘‘ একজন ছাত্র ৫ আগস্টের আগে যারা হলে থাকতো, যারা টিউশনি করতো তারা হঠাৎ করেই এতো টাকার মালিক হয়ে গেলেন… তিন-চার-পাঁচ কোটি টাকার গাড়িতে চড়েন….আগে-পিছে আট-দশটা-বিশটা কোটি টাকার গাড়ি থাকে তাদের জন্য যাতায়াতের ব্যবস্থার থাকে… এই যে একটা অশনিসংকেত জাতির জন্য।”

‘‘ এর থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনুস সাহেব জাতিকে মুক্তি দেবেন.. এটাই আমাদের দাবি।”

এনসিপির আত্মপ্রকাশে সরকারি পৃষ্ঠাপোষকতায় সারা দেশ থেকে লোকজন আনা, প্রশাসনকে ব্যবহার করার কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘ ‘মানুষজন বলছে, এটা একটা কিংস পার্টি।’

বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘‘ আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, জামায়াতে ইসলাম ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সাথে এক সাথে থেকে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে ১৭৫ দিন হরতাল পালন করেছিলো এবং সেদিন তারা আওয়ামী লীগে সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন করেছিলো। সেই নির্দলীয তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা দেশনেত্রী সংবিধানে সংযোজন করেছিলেন জনগনের কল্যাণের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য।”

‘‘ ৫ আগস্টের পর আমরা কি দেখলাম? জামায়াতের আমির তিনি এক সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন, উনি হঠাৎ বলে দিলেন, দেশে যা ঘটেছে যারা যে অন্যায় করেছেন আমরা সবাইকে মাফ করে দিলাম। আপনি মাফ করে দেয়ার কে? জামায়াতের এসব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।”

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জননেতা মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়ার ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ভাসানী স্মৃতি সংসদ ও জননেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন কমিটির এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

‘একাত্তর বাংলাদেশের ভিত্তি’

বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘‘ রাজনীতিতে এই ছাত্র শিবিরের নেতারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সাথে ছিলেন, আত্মগোপন থেকে তারা আত্মপ্রকাশ করলেন। বৈষম্য বিরোধীরা যারা নতুন দল গঠন করলেন তারা হঠা করে বক্তব্য দিয়ে বসলেন, আমরা ৪৭ এর পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে চাই, আমরা একাত্তর মানি না।”

‘‘ যারা একাত্তর মানে না, যারা ’৫২ মানে না তারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকেও মানে না। একাত্তর হলো আমাদের স্বাধীনতার মূল স্তম্ভ, আমাদের ভিত্তি, একাত্তর হলো ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই বাংলাদেশ। অতএব একাত্তর যারা মানে আমি মনে করি, তাদের এদেশের মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার অধিকার নাই এবং ভোটে প্রার্থী হওয়ারও যোগ্যতা নাই, অধিকারও নাই। আমি মনে করি, শহীদ জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে বাংলাদেশ হয়েছে, এই গণতন্ত্রের জন্যই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে.. অন্য কারণে হয় নাই।”

‘নুন্যতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন’

বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘‘ এভাবে দেশ চলতে পারে না। প্র্রতিদিন কি ঘটছে? আপনারা দেখছেন। দেশে মব জাস্টিসের নামে যেকোনো মানুষের বাড়িতে হামলা হচ্ছে, যেকোনো মানুষের সম্পদ লুন্ঠন হচ্ছে, যেকোনো মানুষ যেকোনো জায়গায় খুন হচ্ছে, মারা যাচ্ছে… আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতো অবণতি হয়েছে… দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতি মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে, দেশে বিনিয়োগ আসছে না…। ”

‘‘ এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে হলে দেশে এখন একটি গণতান্ত্রিক সরকার দরকার, নির্বাচিত সরকার দরকার। অন্তবর্তীকালীন সরকারেরর এতো সব কাজ করার ম্যান্ডেট নেই। তাই তাদের উচিত অতি দ্রুত ন্যুনতম সংস্কার করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন এটাই জনগন প্রত্যাশা করে আছে। আমি বলতে চাই যত দ্রুত নির্বাচন দেবেন তত দ্রুত দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।”

ভাসানী স্মৃতি সংসদের সভাপতি জিয়াউল হক মিলুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক নাদিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কৃষক দলের তকদীর হোসেন মো. জসিম, ভাসানী স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ন্যান্সি রহমান প্রমূখ বক্তব্য রাথেন।

 

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *