সকাল ৭:০৫ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে বাধা কোথায়?

এনজি প্রতিবেদক

১২ জুলাই ২০২৪

 

 

নির্বাহী আদেশে কারাগারের বাইরে রয়েছেন আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দফায় দফায় বাড়ছে তার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চায় পরিবার ও দল। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার সরকারের কাছে আবেদন জানানো হলেও সাড়া মিলছে না।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর’ বা ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী দুই শর্তে (বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ ও দেশের বাইরে যেতে পারবেন না) নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় যে আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে, এখন সে আবেদনের ওপর আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই, শুধু মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া।

এরপরও বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন‌্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানানো হচ্ছে। সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ‌্যের ক্রম অবনতির জন‌্য সরকারকে দায়ী করছে বিএনপি। দোষারোপ করা হচ্ছে আইনমন্ত্রীকেও। সরকারও আইন-কানুনের দোহাই দিয়ে খালেদা জিয়াকে বিদেশে না পাঠানোর সিদ্ধান্তে অনড়।

তবে যে আইনে বিএনপি নেত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, একই আইনে তাকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন কোনো কোনো আইনজীবী। তারা বলছেন, এটি সরকারের সদিচ্ছার বিষয়। তবে কোনো কোনো আইনজীবী বলছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির যে ধারায় খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রাখা রয়েছে, সে অনুযায়ী তাকে বিদেশে পাঠানো যাবে না। প্রথমে এ সুবিধা বন্ধ করে তাকে ফের জেলে যেতে হবে। এরপর নতুন করে বিদেশে নিতে আবেদন করলে, সেক্ষেত্রে সরকার বিবেচনা করতে পারবে।

নির্বাহী আদেশে কারাগারের বাইরে রয়েছেন আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দফায় দফায় বাড়ছে তার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চায় পরিবার ও দল। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার সরকারের কাছে আবেদন জানানো হলেও সাড়া মিলছে না।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর’ বা ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী দুই শর্তে (বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ ও দেশের বাইরে যেতে পারবেন না) নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় যে আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে, এখন সে আবেদনের ওপর আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই, শুধু মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া।

এরপরও বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন‌্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানানো হচ্ছে। সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ‌্যের ক্রম অবনতির জন‌্য সরকারকে দায়ী করছে বিএনপি। দোষারোপ করা হচ্ছে আইনমন্ত্রীকেও। সরকারও আইন-কানুনের দোহাই দিয়ে খালেদা জিয়াকে বিদেশে না পাঠানোর সিদ্ধান্তে অনড়।

তবে যে আইনে বিএনপি নেত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, একই আইনে তাকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন কোনো কোনো আইনজীবী। তারা বলছেন, এটি সরকারের সদিচ্ছার বিষয়। তবে কোনো কোনো আইনজীবী বলছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির যে ধারায় খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রাখা রয়েছে, সে অনুযায়ী তাকে বিদেশে পাঠানো যাবে না। প্রথমে এ সুবিধা বন্ধ করে তাকে ফের জেলে যেতে হবে। এরপর নতুন করে বিদেশে নিতে আবেদন করলে, সেক্ষেত্রে সরকার বিবেচনা করতে পারবে।

২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে মোট নয়বার আবেদন দেওয়া হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জানা গেছে। সব আবেদনেই তারা খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। পরিবারের আবেদনের পর এ বিষয়ে মতামতের জন‌্য তা আইন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতসহ প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর প্রজ্ঞাপন জারি করে সুরক্ষা সেবা বিভাগ।

খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত ও মেয়াদ বাড়ানোর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে দাখিল করা আবেদন এবং আইন ও বিচার বিভাগের আইনগত মতামতের আলোকে ‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর’ এর ধারা-৪০১(১) এ দেওয়া ক্ষমতাবলে দুই শর্তে (ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা ও দেশের বাইরে যেতে পারবেন না) তার (খালেদা জিয়ার) দণ্ডাদেশ ২৫ মার্চ থেকে ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হলো।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। অসুস্থতা বাড়লে মাঝেমধ্যে তাকে নিতে হচ্ছে হাপাতালে। সম্প্রতি তার হৃদযন্ত্রে বসানো হয়েছে পেসমেকার। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৮ জুলাই ভোর ৪টা ২০ মিনিটে জরুরি ভিত্তিতে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির ক্ষেত্রে পরিবার ও দলের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘দেখেন, আমি একটা কথা বুঝতে পারছি না। খালেদা জিয়া মুক্ত, এ মুক্ত মানুষকে আবার কি করে মুক্তি দেবো আমি তো বুঝে উঠতে পারছি না।’

তবে খালেদা জিয়াকে কেন বিদেশে পাঠানো যাচ্ছে না- সে ব‌্যাখ‌্যা তুলে ধরে এর আগে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘যেহেতু ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় যে আবেদন ছিল সেটি নিষ্পত্তি হয়েছে। ৪০১ ধারায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এখন সেই আবেদনের ওপরে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই, এটির পুনঃনিষ্পত্তি করার কোনো অবকাশ নেই, শুধু মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া। এর বাইরে আইনিভাবে আমাদের কিছু করার নেই।’

তিনি বলেন, ‘বিদেশ যেতে পারবেন না বলে আগেই শর্ত দেওয়া ছিল, এখন সেটিকে পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই।’

যা আছে ৪০১ ধারায়

১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী, সরকার চাইলে বিনাশর্তে বা শর্তসাপেক্ষে কারও দণ্ড স্থগিত বা মওকুফ করতে পারে। স্থগিতাদেশের সময় বাড়াতে পারে। আবার শর্ত ভাঙলে স্থগিতাদেশ বাতিলও করতে পারে।

এ ধারায় উপধারা আছে ৬টি। উপধারা-১ এ বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলে সরকার যে কোনো সময় বিনা শর্তে বা শর্তে তার দণ্ড স্থগিত, অংশবিশেষ বা পুরোপুরি মওকুফ করতে পারবে।

উপধারা-২ বলছে, কোনো দণ্ড স্থগিত বা মওকুফ করতে সরকারের কাছে আবেদন করা হলে সরকার দণ্ড প্রদানকারী বিচারকের মতামত নিতে পারে এবং বিচারের নথি পাঠানোর নির্দেশ দিতে পারে।

উপধারা-৩ এ বলা আছে, যেসব শর্তে দণ্ড স্থগিত বা মওকুফ করা হয়েছে, কোনোটি পালন করা হয়নি মনে করলে সরকার সাজা স্থগিত বা বাতিলের আদেশ বাতিল করতে পারবে। সেক্ষেত্রে পুলিশ তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবে এবং দণ্ড ভোগ করার জন্য তাকে জেলে পাঠানো যাবে।

উপধারা-৪ অনুযায়ী দণ্ড স্থগিত বা মওকুফ করার শর্ত এমন হবে যা পূরণে সে স্বাধীন থাকবে।

এই ধারার আবার একটি উপধারা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোনো ফৌজদারি আদালত কোনো আদেশ দিলে তা সেই ব্যক্তির স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে বা তার বা সম্পত্তির ওপর দায় আরোপ করতে পারে।

উপধারা-৫ অনুযায়ী, এই ধারা যে ব্যক্তির ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে, তিনি রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা প্রদর্শনের অধিকারী থাকবেন।

উপধারা-৬ এ বলা হয়েছে, সরকার সাধারণ বিধিমালা বা বিশেষ আদেশ দিয়ে দণ্ড স্থগিত রাখা এবং দরখাস্ত দাখিল ও বিবেচনার শর্তাবলীর বিষয়ে নির্দেশ দিতে পারবে।

আরএমএম/ এনজি

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *