দুপুর ১:৪৪ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

চাঁদপুরে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ সেপ্টম্বর ২০২৪

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সাংবাদিক সমাজের অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী। আজ বুধবার বাদ মাগরিব জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরের গোভিন্দিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাব, ডিআরইউসহ গ্রামের বাড়িতে অনুষ্ঠিত জানাজায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো মানুষের ঢল নামে। তারা ফুলেল শূভেচ্ছায় সিক্ত করে তাদের প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো বিদায় জানান। এসময় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষকে অস্রুসজল নয়নে দেখা যায়। জাতীয় প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠিত মূল জানাজায় ইমামতি করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা শফিকুর রহমান। এ জানাজায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শেণীপেমার মানুষ অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় প্রিয়জনদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন বিএফইউজে সভাপতি ও দৈনিক সংগ্রামের চিফ রিপোর্টার রুহুল আমিন গাজী। তার ইন্তেকালে শোকের ছায়া নেমে আসে সাংবাদিক সমাজসহ পেশাজীবী অঙ্গনে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্য বিষয়ক উপদেষ্ট, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বিএফইউজে, ডিইউজেসহসাংবাদিক সমাজের সব সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবি সংগঠন, বিভিন্ন সংস্থা শোক জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাতে মৃত্যুর পর গোছল দিয়ে লাশ রাখা হয় ফ্রিজিং গাড়িতে। আজবুধবার সকালে রুহুল আমিন গাজীর লাশ আনা হয় তার দীর্ঘ দিনের কর্মস্থল দৈনিক সংগ্রামে। বৃষ্টিভেজা দিনে তার সহকর্মীরা ফ্রিজিং গাড়ির কাঁচ দিয়ে তাদের প্রিয় নেতাকে দেখে অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠেন। বৃষ্টির পানিতে বারবার ঘোলা হয়ে যাচ্ছিল এম্বুলেন্সের গ্লাস। সেটিকে বার বার মুছে তা পরিষ্কার করছিলেন সহকর্মীরা। দৈনিক সংগ্রামে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহানগর উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা হালিম উদ্দিন, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন, দৈনিক সংগ্রামের এমডি ড. নূরুল আমিন, জেনারেল ম্যানেজার আবুল হোসাইন, সার্কোলেশন ম্যানেজার এমদাদ হোসাইনসহ অন্যরা।

সংগ্রাম কার্যালয় থেকে রুহুল আমিন গাজীর কফিন নেওয়া হয় তার দীর্ঘ চার দশকেরও প্রিয় স্থান জাতীয় প্রেসক্লাবে। বাদ জোহর সেখানে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ঈমামতি করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। উপস্থিত মুসল্লিদের সামনে কথা বলেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, ডিইউজের সভাপতি মো: শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাছিল জামাল, রুহুল আমিন গাজীর একমাত্র ছেলে আফনান আবরার আমিন প্রমূখ।

জানাজার আগে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, রুহুল আমিন গাজী দেশের অঙ্গণে একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক ছিলেন। তিনি সবসময় দেশের পক্ষে কথা বলেছিলেন। তিনি কারা নির্যাতিত ছিলেন। আমরা অন্তর্র্ব্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করছি। গণতন্ত্রের জন্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তিনি আজীবন লড়াই করেছেন। এই মূহুর্তে সাংবাদিক সমাজের ওনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন ছিল। আমরা দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্তির পাশাপাশি গণমাধ্যমকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে তাকে অনুসরণ করবো।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, রুহুল আমিন গাজী একজন সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। তিনি দেশের জন্য, জাতির জন্য কাজ করেছেন। দেশের মানুষের পক্ষে সবসময় কথা বলেছেন। স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারের জন্য তিনি দীর্ঘসময় ধরে কারাবরণ করেছেন। জাতি সারাজীবন তাকে মনে রাখবে। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন বলেন, মহান রাব্বুল আলামিন রুহুল আমিন গাজীকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক। তিনি ছিলেন স্বৈরাচার পতন আন্দালনের রাজপথের অকুতোভয় একজন যোদ্ধা।
কবি আব্দুল হাই সিকদার বলেন, রুহুল আমিন গাজী অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। আমরা তার মাগফিরাত কামনা করছি।
প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, তিনি যখন জেলে ছিলেন, তখন তার সুচিকিৎসা হয়নি। যদি হতো তাহলে হয়তো আজকে এমন টা হতো না। উনি সাংবাদিক সমাজের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবেন।
প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়া বলেন, রুহুল আমিন গাজীর সঙ্গে আমার অসংখ্য স্মৃতি আছে। তিনি রাস্তায় আন্দোলন করতে গিতে কারাভোগ করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। সাংবাদিকতার আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবরণের উদাহরণ খুব কমই আছে।

রুহুল আমিন গাজীর ছেলে আফনান আবরার বলেন, বাবা সব সময় আমার কাছে একটাই জিনিস চাইতেন, যে তুমি কখনো দেশের বাইরে চলে যেও না, যত কিছুই হোক মাতৃভূমি ছাড়া যাবে না। চলার পথে অনেকেরই ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকে। বাবারও যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে সে ভুল ক্ষমা করে দেবেন।

রাজনীতিবিদদের মধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, আজিজুল বারী হেলাল, মীর সরফত আলী সপু, শামীমুর রহমান শামীম, কাজী রওনুকুল হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কর্ম পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেইন, ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম প্রমূখ। অন্য দলের মধ্যে এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমূখ জানাজায় অংশ নেন।

সাংবাদিকদের মধ্যে জানাজায় অংশ নেন, দৈনিক সংগ্রামের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কবি সাজ্জাদ হোসাইন খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, কামাল উদ্দিন সবুজ, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, মোল্লা জালাল, ওমর ফারুক আবদুল জলিল ভুঁইয়া, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, বাসসের সাবেক ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, সিনিয়র সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া, ড. আবদুল হাই সিদ্দিকী, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, ডিইউহেজর সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, এনটিভির নুরুউদ্দিন নুরু, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজের সহসভাপতি কে এম মহসিন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, রফিকুল ইসলাম আজাদ, ইলিয়াস হোসেন, শাহেদ চৌধুরী, মুরসালিন নোমানী, খালেদা জিয়ার প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার, ডিইউজের রাশেদুল হক, ওবায়দুর রহমান শাহিন, বাছির জামাল, সোহেল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমূখ।

ঢাকার বাইরে থেকে রুহুল আমিন গাজী জানাজায় উপস্থিত ছিলেন মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি মো: আনিসুজ্জামান, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ রাশিদুল ইসলাম, সাবেক নির্বাহী সদস্য এইচএম আলাউদ্দিন, এমইউজের কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রানা, সদস্য মোঃ জাকিরুল ইসলাম, মাশরুর মুর্শেদ, নাজমুল হক পাপ্পু, আরিফ আহমেদ, কামরুল হোসেন মনি, এস এ মুকুল প্রমূখ।

জানাজা শেষে প্রথমে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শ্রদ্ধা জানান। এর পর জাতীয় প্রেসক্লাব বিএফইউজে, ডিইউজে, পিআইবিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে রুহুল আমিন গাজীর প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবের পর দুপুর আড়াইটায় ডিআরইউ প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা শেষে ফুলেল শ্রদ্ধায় তাকে শেষ বিদায় জানানো হয়। ডিআরইউ’র সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ ও সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন এর নেতৃত্বে রুহুল আমিন গাজীর কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায় কার্যনির্বাহী কমিটি।

এসময় ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির শফিকুল ইসলাম শামীম, যুগ্ম সম্পাদক মো: মিজানুর রহমান (মিজান রহমান), অর্থ সম্পাদক মো: জাকির হুসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুশান্ত কুমার সাহা, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. রাশিম (রাশিম মোল্লা), ক্রীড়া সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. মনোয়ার হোসেন, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ) ও কল্যাণ সম্পাদক মো: তানভীর আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ শিপন, রফিক মৃধা ও মো. শরীফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, সাবেক দফতর সম্পাদক মো: জাফর ইকবাল, ডিআরইউ বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বদরুল আলম চৌধুরী (খোকন)সহ সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

তথ্য উপদেষ্টার শোক :

রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। উপদেষ্টা বলেন, রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন গুণী সাংবাদিককে হারালো। তাঁর চলে যাওয়া গণমাধ্যমের জন্য অপূরনীয় ক্ষতি।
জামায়াত আমীরের শোক :
রুহুল আমিন গাজীর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। শোকবাণীতে তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজীর ইন্তিকালে গভীরভাবে শোকাহত। তিনি দেশের একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক সমাজে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তার লেখনি এবং বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন, গণতন্ত্রের বিকাশ এবং সত্য প্রতিষ্ঠার একজন অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন। দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ফ্যাসিবাদের কবর রচনায় তাঁর ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষানলে পড়ে তাকে দীর্ঘদিন কারাবরণ করতে হয়েছিল। তারপরও তিনি সত্যের পক্ষে লেখনি চালিয়ে গেছেন। মজলুমের পাশে দাঁড়াতে তিনি কখনো কুণ্ঠাবোধ করেননি। মজলুমের পক্ষে তাঁর লড়াই স্মরনীয় হয়ে থাকবে। তাঁর শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়। তাঁর ইন্তিকালে আমরা একজন দেশপ্রেমিক, অকুতোভয় ও মেধাবী সংবাদিক নেতাকে হারালাম।
জামায়াতে আমীর আরও বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁকে ক্ষমা ও রহম করুন এবং তাঁর কবরকে প্রশস্ত করুন। তাঁর গুনাহখাতাগুলোকে ক্ষমা করে দিয়ে নেকিতে পরিণত করুন। কবর থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রত্যেকটি মঞ্জিলকে তাঁর জন্য সহজ, আরামদায়ক ও কল্যাণময় করে দিন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন এবং তাঁর শোকাহত পরিবার-পরিজনদেরকে এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।
শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ কালচার একাডেমির (বিসিএ) সভাপতি আবেদুর রহমান, সেক্রেটারি ইব্রাহিম বাহারী ও প্রচার সম্পাদক হারুন ইবনে শাহাদাত। তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রুহুল আমিন গাজীর সব ভালো কাজ কবুল করুন, তাকে ক্ষমা করে দিন এবং জান্নাতুল ফেরদাউসের মেহমান হিসেবে কবুল করুন।
রুহুল আমিন গাজী মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
এক শোকবাণীতে মহানগরী নেতৃদ্বয় বলেন,মরহুম রুহুল আমিন গাজী ছিলেন গণমাধ্যম জগতের উজ্জল নক্ষত্র। তিনি সাংবাদিক নেতা হিসাবেও বেশ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি সকল গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি দীর্ঘ সময় কারাগারে ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা একজন মেধাবী ও প্রাজ্ঞ ও দেশপ্রেমিক গণমাধ্যমকর্মীকে হারালাম।
শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, রুহুল আমিন গাজীর ইন্তেকালে দেশ ও জাতি একজন অবিসংবাদিত সাংবাদিক নেতাকে হারিয়েছে। তিনি সত্য ও ন্যায়ের ওপর অবিচল আস্থা বিশ্বাস ও বিশ্বস্ত থেকে বাংলাদেশের গনতন্ত্র, আইনের শাসনে সাহসী ভুমিকা পালন করছেন। জাতীয় সংকট ও ক্রান্তিকালে তিনি বীরোচিত ভুমিকা পালন করছেন।
রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ এবং সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
চাঁদপুরের গুবিন্দিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণকারী রুহুল আমিন গাজী বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হন এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। শেখ হাসিনার সরকারের সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন টানা ১৭ মাসের বেশি সময়। কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও জামিন পাননি তিনি।
রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ ও সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
তিনি ১৯৫৬ সালের ১২ নভেম্বর চাঁদপুর সদরের গোবিন্দিয়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৌলভী কফিল উদ্দিন, মাতা আয়েশা খাতুন। সাংবাদিকদের র্শীষ সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র ৪র্থ বারের মতো সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বিএফইউজে’র মহাসচিব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *