বিশেষ প্রতিবেদন
মোহাম্মদ জাফর ইকবাল
২৮ এপ্রিল ২০২৫
বজ্রপাত প্রকৃতির একটি স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু বর্তমানে এটি প্রাণঘাতী বিপদে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে এই বজ্রপাতে। গত রবি ও আজ সোমবার সারাদেশে কমপক্ষে ১৫ জন মানুষ মারা গেছে। বজ্রপাত মোকাবেলায় নানা উদ্যোগ নিলেও সেগুলো কার্যত আলোচনায় সীমাবদ্ধ।
সূত্র মতে, বজ্রপাত হলো মেঘ থেকে ভূমিতে বিদ্যুতের তীব্র নিঃসরণ, যা সাধারণত কালবৈশাখী ঝড়ের সময় ঘটে। উষ্ণ ও আর্দ্র বাষ্প দ্রুত উপরে উঠে ঠাণ্ডা হয়ে ঘনীভূত হলে মেঘের মধ্যে ইলেকট্রিক চার্জ তৈরি হয়। অতিরিক্ত শক্তি জমে গেলে সেই চার্জ মাটিতে নেমে আসে, এটিই বজ্রপাত। এই সময় তাপমাত্রা ৩০,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়, যা মুহূর্তে প্রাণ কেড়ে নিতে পারে।
বাংলাদেশে প্রতিবছর বজ্রপাতে কয়েকশ মানুষ প্রাণ হারান। ২০২৪ সালে সরকারি হিসেবে প্রায় ৪০০ ও বেসরকারি হিসেবে ৬৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। গড়ে প্রতিদিন দুইজনের বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ এই মৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য, হঠাৎ এবং যন্ত্রণাহীন হলেও ভয়াবহ। গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি ১ক্ক সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা ১২% বাড়ে। বাংলাদেশে গত ৩০ বছরে গড় তাপমাত্রা প্রায় ১.৫ক্ক বেড়েছে। তার ওপর নির্বিচারে গাছ কাটা ও বনভূমি হ্রাস এই পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। ১৯৯০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশে প্রায় ২৫% বনভূমি হারিয়ে গেছে। ফলে বজ্রপাত সরাসরি মাটিতে আঘাত করছে, প্রাণ নিচ্ছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে কৃষক, দিনমজুর ও শিশুরা বেশি ঝুঁকির মুখে। কারণ মাঠে কাজ করার সময় তাদের আশ্রয়ের কোনো নিরাপদ ব্যবস্থা নেই। শুধু তাই নয়, গ্রামীণ ভবনগুলোতে বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা যেমন লাইটনিং অ্যারেস্টর নেই বললেই চলে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের মাত্র ৮% গ্রামীণ ভবনে লাইটনিং অ্যারেস্টর রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের জরিপে জানা গেছে, মাত্র ১৮% গ্রামীণ মানুষ জানেন যে বজ্রপাতের সময় গাছ বা বিদ্যুতের খুঁটির নিচে দাঁড়ানো বিপজ্জনক। অধিকাংশই জানেন না বজ্রপাতের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার, ধাতব গহনা পরিধান বা পানিতে থাকা কতটা বিপদজনক হতে পারে। বাংলাদেশ এখনো সচেতনতার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। সরকার প্রকল্প নিলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন একেবারেই দুর্বল। এই বিপদ মোকাবিলায় সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি জাতীয় বজ্রপাত ঝুঁকি হ্রাস নীতিমালা তৈরি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাধ্যতামূলক করা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে বজ্রনিরোধক অবকাঠামো নির্মাণ, বিনামূল্যে মোবাইল সতর্কবার্তা চালু, এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র মতে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতি ৫০০ মিটার অন্তর উচ্চ কংক্রিটের আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে। এসব বাস্তবায়ন হলে মাঠে কাজ করা কৃষকদের প্রাণরক্ষা সম্ভব। বজ্রপাত একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও এর ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে মানুষের সচেতনতা সবচেয়ে বড় অস্ত্র। গাছ লাগানো, নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহণ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই মৃত্যুর মিছিল থামানো সম্ভব।
চলতি বছর গত ১৫ এপ্রিল দেশের প্রথম বজ্রপাত হয়েছিল সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জে। এতে দিলোয়ার হোসেন (৪০) নামের এক কৃষক নিহত হন। বিকেলে উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে বাড়ির পাশের পুটিয়া নদীর পাড় থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। গত ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশের পূর্বঞ্চলের ছয়টি উপজেলায় একদিনে বজ্রপাতে ৯ জন প্রাণ হারান। এরপর ২৭ এপ্রিল একদিনে ছয় জেলায় আটজন বজ্রপাতের ফলে প্রাণ হারিয়েছেন। সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে গত রোববার ও গতকাল সোমবার ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় ৪ জন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে ৩ জন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও মদনে ২ জন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে একজন, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় একজন, চাঁদপুরের কচুয়ায় একজন, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে একজন মারা গেছেন।
গতকাল কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বরুড়ায় দুই স্কুল ছাত্র এবং মুরাদনগরে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন, বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং বিল্লাল হোসেন ছেলে মোহাম্মদ জিহাদ (১৪)। দুপুরে হালকা বৃষ্টির মাঝে মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া মুরাদনগরের পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের নিখিল দেবনাথ (৫৫) ও উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের জুয়েল ভূঁইয়া (৩২) মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় আহত হন আরও ২ ব্যক্তি।
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে খয়েরপুর আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের হাওরে ধান কাটার সময় সকাল পৌনে ১০টার দিকে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৫)। এছাড়াও একই গ্রামের শ্রমিক সহোদর দাস (৫০) বজ্রপাতে আহত হয়ে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। প্রায় একই সময়ে মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে বজ্রপাতে ফুলেছা বেগম (৬৫) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধনুন্দ গ্রামে নিজ বাড়িতে রোববার রাত ১০টার দিকে বজ্রপাতে আহত হন দিদারুল ইসলাম (২৮)। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি পাশের খারনৈ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকায় একটি ইফতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন।
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে গতকাল সকালে বজ্রপাতে রিমন তালুকদার নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। রিমন আটগাঁও গ্রামের বাসিন্দা এবং শাল্লা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার হাওরে বজ্রপাতে দুর্বাসা দাস (৩৫) নামে এক ধান কাটা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৩ জন। চাঁদপুরের কচুয়ায় বজ্রপাতের বিকট শব্দে বিশাখা রানী (৩৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলাধীন বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মাখন রবি দাস (৪৮) নামে এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে সেফালী বেগম (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মানিক মিয়া (৬৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। তার সঙ্গে থাকা হানিফ মিয়া (৬০) গুরুতর আহত হয়েছেন।
সূত্র মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ায় বজ্রপাতে মৃত্যু হার বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে বাংলাদেশে। এতে সারা বিশ্বে যে সংখ্যায় মারা যায়, তার এক-চতুর্থাংশই এদেশে। দেশের হাওড়, বাঁওড় ও বিলপ্রবণসহ প্রায় ১৩টি জেলায় বজ্রপাতের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বেসকারি সংগঠন ‘ডিজাস্টার ফোরাম-এর তথ্যমতে, এদেশে প্রতি বছর গড়ে বজ্রপাতে ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই মাঠে থাকা কৃষক, সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ি ফেরার পথে, আর ১৩ শতাংশ গোসল কিংবা মাছ শিকারের সময়। তবে শহরের ভবনগুলোতে বজ্রপাত প্রতিরোধক দণ্ড থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম। ২০১১-এর শুরু থেকে ২০২২ পর্যন্ত ১২ বছরে দেশে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৬২ জনের।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক ড. ইফতি খাইরুল আমিন গণমাধ্যমে বলেন, দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুরোধ করতে প্রযুক্তির দিকে মনোযোগী হতে হবে, যাতে পূর্বাভাস পাওয়া যায়। এছাড়া মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বজ্রপাত থেকে বাঁচতে খোলা জায়গায় না থেকে নিরাপদ জায়গায় থাকতে হবে। এ সময় বড় গাছের নিচে থাকাটা সবচেয়ে অনিরাপদ। কারণ বজ্রপাত উঁচু কিছুর ওপরেই আঘাত হানে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যানুযায়ী প্রতি বছর বাংলাদেশে গড়ে বজ্রপাতে কমবেশি ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়। গত এক যুগে তিন হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। তথ্য মতে, ২০২২ সালে ৩৩৭ জন, ২০২১ সালে ৩৬৩ জন, ২০২০ সালে ২৩৬ জন, ২০১৯ সালে ১৬৮ জন, ২০১৮ সালে ৩৫৯ জন, ২০১৭ সালে ৩০১ জন, ২০১৬ সালে ২০৫ জন এবং ২০১৫ সালে ১৬০ মারা গেছেন। প্রতি বছর মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের গবেষণা সেলের কর্মকর্তা আবদুল আলীম জানান, বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ দুইটি। বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গাছ বিশেষ করে মাঠের উঁচু গাছ কেটে ফেলা। হাওর অঞ্চলের মাঠে আগেও তেমন গাছ ছিল না। এখন অন্যান্য এলাকার গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে মাঠে বা খোলা জায়গায় যে সব মানুষ থাকেন বজ্রপাতের এক কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিবাহী উঁচু জিনিস হিসেবে সেই মানুষকেই পায়। মানুষ না থাকলে মাঠের গবাদি পশু। ফলে মানুষ মারা যায়, গবাদি পশুও মারা যায়। গাছের তলায় আশ্রয় নিলে গাছের বিদ্যুৎ মানুষকে আক্রান্ত করবে
জানা গেছে, দেশে বজ্রপাত প্রতিরোধ ও মানুষের জীবন বাঁচাতে সারাদেশে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এক কোটি তাল গাছের চারা রোপণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলো সরকার। এরমধ্যে সারাদেশে ৩৮ লাখ চারা রোপণের পর দেখা যায় তা এক বছরের মধ্যেই অযত্নে অবহেলায় মারা যায়। এই পরিকল্পনা যথার্থ ছিলো না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ তালগাছ রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও এগুলো বড় হয়ে মানুষের চেয়ে উঁচু হতে ২০-৩০ বছর সময় লেগে যায়। তারা বলছেন,এখন প্রয়োজন হলো, ফাঁকা জায়গাগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র এবং টাওয়ার স্থাপন করা। অল্প সময়ে সহজ পদ্ধতি হলো বজ্র নিরোধক দন্ড। এগুলো বসাতে হবে। দীর্ঘ পরিকল্পনায় তাল গাছ, নারকেল গাছ লাগানো যেতে পারে।
বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বেড়ে যাওয়া এবং এর প্রতিকার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্বে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় বাংলাদেশে। এই ব্যাপারে আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম (প্রাক-সতর্কীকরণ ব্যবস্থা) ও লাইটেনিং এরেস্টর (বজ্রপাত নিরোধক) স্থাপনের মাধ্যমে মানুষকে রক্ষার পদক্ষেপ নেওয়া যায়। আর এ কাজটি সরকারকে করতে হবে। পাশাপাশি মানুষকে আরও বেশি সচেতন ও সাবধান হতে হবে। কালবৈশাখীর এই সময়ে আকাশে কালো মেঘ দেখা দিলে, খোলা মাঠে-ঘাটে কাজ করা যাবে না। বাসাবাড়িতে আর্থিংয়ের ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে। তাছাড়া মাঠে-ঘাটে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগালে তা এই ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রতি বর্গকিলোমিটারে অন্তত ৪০টি বজ্রপাত হয়। বাংলাদেশ পৃথিবীর বজ্রপাতপ্রবণ অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। তাই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই।
জা ই / এনজি