রাত ১১:১৮ | শনিবার | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

কোচের বিপক্ষে অভিযোগ বলতে গিয়ে কাঁদলেন সাবিনা-মাসুরারা

বিশেষ সংবাদদাতা

৩০ জানুয়ারি ২০২৫

 

দুপরের পর মোবাইলে নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের খুদেবার্তা, ‘বিকেল ৫ টার দিকে কথা বলবো, থাকবেন।’

নির্ধারিত সময়ের আগেই বাফুফে ভবনের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের ভীড়। কখন বাফুফে ভবনের চতুর্থ তলা থেকে নিচে নামবেন সাবিনারা?

শেষ পর্যন্ত মাগরিবের নামাজের পর সাবিনা ও আরো ১৭ জন সিনিয়র ফুটবলার যখন নিচে নেমে ভবনের সামনের মাঠে সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়ালেন, তখন চারিদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে।

সাংবাদিকদের হাতে তিন পাতার লিখিত অভিযোগ দিয়ে সাবিনারা প্রথম বলছিলেন, ‘যা আছে আমাদের বক্তব্য সব ওখানে লেখা। এর বাইরে আমাদের কিছু বলার নেই।’

এ কথা বলেই তারা আবার ভবনে ঢুকতে চাইলেন। তবে মাঠ থেকে ভবনের দরজার সামনে সাংবাদিকরা তাদের অনুরোধ করলেন, আপনাদের লিখিত অভিযোগগুলোই যদি একটু মুখে বলতেন বা পড়ে শোনাতেন তাহলে ভালো হতো।

শুরু করেছিলেন সাবিনা খাতুন। ‘বিষয়টা এখন আমাদের আত্মসম্মানের’-বাংলাদেশ অধিনায়ক এমন দুই-তিন শব্দের বেশি বলতে পারেননি, কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সাবিনা যখন কান্না করতে করতে পেছনে চলে যান, তখন চোখে পানি দেখা গেছে মাসুরা পারভীন, মারিয়া মান্ডা ও মনিকা চাকমাদেরও।

কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে তাদের যত অভিযোগ, সেটা বর্ণনা করছিলেন মাসুরা পারভীন। কান্নার কারণে তিনিও থেমে থেমে কথা বলছিলেন। আবেগ কিছুতেই সামলাতে পারছিলেন না।

কথা বলেছেন সানজিদা, ঋতুপর্ণা চাকমা, মারিয়া মান্ডা, নিলা, কৃষ্ণা। সবাই ছিলেন আবেগপ্রবণ। ফুটবলারদের দাবি, ক্রান্তিকালে তারা এই বক্তব্য নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

গত অক্টোবরে কাঠমান্ডুতে হওয়া সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সময় থেকেই কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাদের। এমনকি দেশে ফিরেও অনেক সিনিয়র খেলোয়াড় বলেছিলেন, বাটলার কোচ থাকলে তাদের আপত্তি আছে।

বাফুফে অবশ্য তাদের সঙ্গে বিষয়টি মিনিমাইজ না করেই পিটার বাটলারকে দুই বছরের জন্য কোচ নিয়োগ দিয়েছে। মাসুরা পারভীন যেমন বললেন, এটাই তাদের কাছে সবচেয়ে কষ্টের বিষয়। ফুটবলারদের কথা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের দাবিদাওয়া উপেক্ষা করা হয়েছে।

নেপালে যা ঘটেছে, সেটা নেপালেই কোচ মিটমাট করতে পারতেন। দেশে ফেরার পরও তিনি পারতেন সবার সঙ্গে বসতে। তা না করে কোচ খেলোয়াাড়দের অবহেলা করেছেন বলেও অভিযোগ তাদের। কোচ সামান্য বিষয় নিয়ে দুর্ব্যবহার করেছেন, এমন অভিযোগ সাবিনা, মারিয়া, সানজিদা, মাসুরা পারভীনদের।

এক কথায় এই কোচের অধীনে কাজ করতে তার মোটেও স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন না। এই কোচ দায়িত্বে থাকলে তৈরি হওয়া এই দূরত্ব থেকেই যাবে। যা দেশের ফুটবলেরই ক্ষতি করবে।মেয়েদের অভিযোগ, কোচ একটা বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করেছিলেন। যে তাদের মানসিকভাবে মারাত্মকভাবে বিধ্বস্ত করেছে। কোচের কাছ থেকে নাকি গালিগালাজও শুনতে হয়েছে তাদের।

 

টি আই/ এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *