দুপুর ২:২৭ | শনিবার | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় যুবদল নেতার নির্মম হত্যাকান্ড আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলকেই মনে করিয়ে দেয় : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

 

 

কুমিল্লায় যুবদল নেতার নির্মম হত্যাকান্ড আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলকেই মনে করিয়ে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলন, ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার হলো-গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যা থেকে জাতিকে মুক্তি দেয়া, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ভয়ভীতি থেকে দেশবাসীকে নিরাপদ রাখা।

আজ ০১ ফেব্রুয়ারি শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে কুমিল্লার যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামকে সাদা পোষাকধারী লোকেরা ‘নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে হত্যা করেছে অভিযোগ মির্জা ফখরুল সরকার ও প্রশাসনে ঘাপটি মারা আওয়ামী দোসররা এই ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা তার অনসুন্ধান জরুরী বলেও দাবি করেন।

তিনি বলেন, কুমিল্লা জেলাধীন সদর উপজেইলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক তৌহিদুল ইসলামকে সাদা পোশাকধারী লোকেরা বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর নির্যাতন-নিপীড়ণ চালিয়ে তাকে হত্যা করে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতনের পরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে এ ধরণের বিচার বহির্ভূত হত্যা দুর্ভাগ্যজনক। এহেন বিচার বহির্ভূত হত্যার ঘটনায় দেশবাসী হতবাক হয়েছে, এই হত্যাকান্ডের ঘটনা জনমনে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকার ও প্রশাসনে আওয়ামী দোসরদের ঘাপটি মেরে থেকে রক্তাক্ত ঘটনা ঘটানো হচ্ছে কি না সেটি নিয়ে গভীর অনুসন্ধান জরুরী। কোন সরকারী বাহিনীই আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। অপরাধ সংঘটনকারী যতই শক্তিশালী হোক, তাকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া আইনের শাসনের অন্যতম শর্ত। কিন্তু তাকে কখনোই বিচার বহির্ভূতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করার কোন অধিকার সরকারী বাহিনীগুলোর নেই। আামি তৌহিদুল ইসলামকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। এই হত্যাকান্ডে জড়িত প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কুমিল্লার যুব নেতার এই নির্মমতা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলকেই মনে করিয়ে দেয়। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার হলো-গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যা থেকে জাতিকে মুক্তি দেয়া, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ভয়ভীতি থেকে দেশবাসীকে নিরাপদ রাখা। কিন্তু আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের যদি পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে আবারও দেশে নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে আসবে। মানুষ এক অজানা আশঙ্কায় দিনাতিপাত করবে। বেআইনী হত্যা করে কখনোই সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা যায় না, এতে আইনের শাসনকে চরমভাবে অবজ্ঞা করা হয় এবং দেশকে ঠেলে দেয়া হয় আদিম অন্ধকারের দিকে।
বিবৃতিতে তৌহিদুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জ্ঞাপন করেন বিএনপি মহাসচিব।

এদিকে যৌথবাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, যৌথ বাহিনীর হাতে আটকের পর নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়। তৌহিদুলের শরীরে নির্যাতনের অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। বিষয়টি চিকিৎসক ও তার পরিবারের সদস্যরাও নিশ্চিত করেছেন। ছাত্রদলের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, হত্যাকারীদের অবিলম্বে চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। কোনো খুনি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্য হিসেবে থাকতে পারে না।

 

জা ই / এনজি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *