ভোর ৫:৩৪ | মঙ্গলবার | ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বসন্তকাল | ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঋণ জালিয়াতি : সোনালী ব্যাংকের সাবেক সাত কর্মকর্তাসহ ১১ জনের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
৭ এপ্রিল ২০২৫

 

 

ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের দায়ে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিতরা হলেন- ব্যাংকটির সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, জিএম ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, এজিএম সাইফুল হাসান ও কামরুল হোসেন খান, ডিজিএম সফিজ উদ্দিন আহমেদ, খান জাহান আলী সোয়েটার্স লি. এর চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আ. জলিল শেখ, পরিচালক রফিকুল ইসলাম এবং মীর মোহাম্মদ শওকত আলী।

দণ্ডিতদের মধ্যে প্রথম ৭ জনকে (সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা) বিশ্বাস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের দায়ে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছেন।

অপর চারজনকে বিশ্বাস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের দায়ে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। যা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। এই অর্থ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রতারণার দায়ে তাদের সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে মর্মে আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেক্ষেত্রে তাদের সর্বোচ্চ সাজা সাত বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফকির মো. জাহিদুর ইসলাম বলেন, রায়ের সময় চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সাত আসামি পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

জানা গেছে, খান জাহান আলী সোয়েটার্স লি. এর তাজুল ইসলাম, আ. জলিল শেখ, রফিকুল ইসলাম এবং মীর মোহাম্মদ শওকত আলীকে সোনালী ব্যাংক হোটেল শেরাটন শাখা থেকে প্রি শিপমেন্ট ক্রেডিট বাবদ ১০ টি এলসি/কনট্রাক্টর প্রদর্শন করে এর বিপরীতে ১৪ টি পিসির মাধ্যমে ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ১৭ মে পর্যন্ত মঞ্জুরি কৃত পিএসসি লিমিট ৩০ লাখ টাকার বিপরীতে এক কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩ টাকা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৪১৫ টাকা সমন্বয় করা হয়। অবশিষ্ট এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা সমন্বয় করা হয় না। খান জাহান আলী সোয়েটার্স লি. এর কর্মকর্তারা ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবৈধ সহযোগিতায় এ টাকা আত্মসাৎ করেন।

এ ঘটনায় দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঞা ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি রমনা মডেল থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২২ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা কমিশনের তৎকালীন সহকারি পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত।

২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভূক্ত ৬১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

এর আগেও ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে সোনালী ব্যাংকের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে কয়েকটি মামলায় সাজা দেওয়া হয়। তবে দণ্ডিতদের অধিকাংশই পলাতক রয়েছেন।

 

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *