নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ আগস্ট ২০২৪
গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতনের পরে বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং অন্যান্য পদাধিকারীদের পদত্যাগের হিড়িক যেমন পড়েছে, ঠিক তেমনী শুরু হচ্ছে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়াও। সম্ভাব্য দাবিদার শিক্ষকগণ যে যার অবস্থান থেকে যোগাযোগ করছেন বিশ^বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে নিয়োগের জন্য। তবে বৈষম্যহীন ছাত্র আন্দোলনের অংশীদার থেকে শুরু করে সুশীল সমাজসহ সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে একাডেমিক ও প্রশাসনিকভাবে দক্ষ শিক্ষকদের নিয়োগ আশা করছেন। ন্যূনতম পিএইচডি. ডিগ্রীধারী অধ্যাপক মর্যাদার ছাত্র-শিক্ষক বান্ধব শিক্ষকদেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের চালকের আসনে সকলে দেখতে ইচ্ছুক।
সূত্র মতে, অন্তর্বর্তীকালীন নতুন সরকারের শপথের প্রথম পর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অধীনে থাকলেও পরবর্তীতে শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। সেই সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয় সাবেক আমলা ড. মো: আব্দুর রশিদকে। অনুসন্ধানী রিপোর্টে বেরিয়ে এসেছে দেশের বড়, পুরনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে ৪৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করেছে।
বৈষম্যহীন ছাত্র আন্দোলনের অংশীদার থেকে শুরু করে সুশীল সমাজসহ সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে একাডেমিক ও প্রশাসনিকভাবে দক্ষ শিক্ষকদের নিয়োগ আশা করছেন। ন্যূনতম পিএইচডি. ডিগ্রীধারী অধ্যাপক মর্যাদার ছাত্র-শিক্ষক বান্ধব শিক্ষকদেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের চালকের আসনে সকলে দেখতে ইচ্ছুক। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য পদে আবেদন করার কোন অফিসিয়াল ব্যবস্থা নাই তথাপি আগ্রহী শিক্ষকবৃন্দ তাদের চ্যানেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য পদে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দের মধ্যে প্রফেসর ড. ওবায়দুল ইসলাম (পদার্থ বিজ্ঞান), প্রফেসর ড. মামুন আহমেদ (ফার্মেসি), প্রফেসর ডক্টর নিয়াজ আহমেদ খান (উন্নয়ন অধয়ন), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. শামীমউদ্দিন খান (ফাইন্যান্স), প্রফেসর ড. মো: ফোরকান (জেনেটিক্স), প্রফেসর ড. মো: কামালউদ্দিন ( আন্তর্জাতিক সম্পর্ক), প্রফেসর ড. এন. এম. সাজ্জাদুল হক (নৃবিজ্ঞান), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম ফারুকী (প্রানিবিদ্দা), প্রফেসর ড. আমজাদ হোসেন (ফাইনান্স), প্রফেসর ড. মোস্তফা কামাল আকন্দ (নৃবিজ্ঞান), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রফেসর ড. শামসুল আলম সেলিম (সরকার ও রাজনীতি), প্রফেসর ড. মানস চৌধুরী (নৃবিজ্ঞান), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটে প্রফেসর ড. সাজেদুল করিম (গণিত) প্রফেসর ড. আশরাফ উদ্দিন (গণিত) এর নাম শোনা যাচ্ছে।
নবীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপকবৃন্দকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতো। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহে উপাচার্য পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর এস. এম. হাসান তালুকদার, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন এবং প্রফেসর ড. এম এম সাজ্জাদুল হক এর নাম শোনা যাচ্ছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে উপাচার্য নিয়োগের জন্য গণস্বাক্ষর কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে কর্তৃপক্ষ সৎ, দক্ষ, মেধাবী এবং বাংলাদেশপ্রেমী অধ্যাপকবৃন্দকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য পদসমূহে বেছে নিবেন বলে সকলেই আশা করছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও গবেষণার ক্ষেত্রে যে শূন্যতা ও ব্যঘাত ঘটেছে তা দূর করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দ্রুতই গতিশীল হয়ে ওঠবে বলে সকলেই আশাবাদী।
জা ই / এনজি