সকাল ৬:২৩ | সোমবার | ১৪ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঈদের দ্বিতীয় দিন ঢাকায় যান চলাচল বেড়েছে, নেই চিরচেনা যানজট

 নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ এপ্রিল ২০২৫

 

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজধানী ছেড়েছেন অসংখ্য মানুষ। ফলে ফাঁকা হয়ে গেছে জনবহুল এই নগরী, নেই চিরচেনা যানজট। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিন যান চলাচল কিছুটা বেড়েছে। আবার যান চলাচল বাড়লেও গণপরিবহনগুলোতে যাত্রী সংকট বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে রাজধানীর শ্যামলী, আসাদ গেট, কলেজ গেট, আড়ং, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, মৎস ভবন এলাকায় দেখা যায়, ঈদের আগের দিন গত রোববার এবং ঈদের দিন সোমবারের তুলনার যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও কিছু যাত্রীর উপস্থিতিও দেখা গেছে। তবে মহানগরীর মধ্যে চলাচলকারী অধিকাংশ বাসে আসন ফাঁকা দেখা গেছে। বিভিন্ন পয়েন্টে বাসের স্টাফদের যাত্রী খোঁজার চিত্র ছিল চোখে পড়ার মতো। যাত্রী সংকটে এসব পয়েন্টে কিছু সময়ের জন্য বাসগুলোকে অপেক্ষা করতেও দেখা যায়।

এদিন যানবাহন চলাচল বাড়লেও সড়কের কোথাও যানজটের চিত্র দেখা মেলেনি। তবে বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালে স্বল্প সময়ের জন্য গাড়িগুলোকে থামতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে ফাঁকা রাস্তায় রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেছে।

ঈদের দ্বিতীয় দিন ঢাকায় যান চলাচল বেড়েছে, নেই চিরচেনা যানজট

এদিকে সড়কে বের হওয়া যাত্রীদের অধিকাংশই আত্মীয়-স্বজনের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হচ্ছেন বলে জানান পরিবহন শ্রমিকরা।

 

তবে ঈদ উপলক্ষে বকশিশের নামে কিছুটা ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ তুলছেন যাত্রীরা। যদিও ভাড়া বেশি নেওয়ার কারণ হিসেবে যাত্রী সংকটকে দুষছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

আমিনবাজার থেকে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে বাংলামোটর বোনের বাসায় এসেছেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় কোথাও যানজট ছিল না, একটানে চলে আসতে পেরেছি। গাড়িতে আসনও ফাঁকা ছিল, যাত্রীও খুব একটা ছিল না।’

 

ঈদের দ্বিতীয় দিন ঢাকায় যান চলাচল বেড়েছে, নেই চিরচেনা যানজট

ভাড়া বেশির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘ঈদ বকশিশের কথা বলে জনপ্রতি ১০ টাকা করে ভাড়া বেশি নিয়েছে। বললাম ঈদ তো শেষ, কাল বকশিশ দিয়েছি, আজ আবার কেন? তারা বলেন রাস্তায় যাত্রী নেই, গাড়ির খরচের টাকাও উঠছে না। কী আর করার, ঈদের সময় দিলাম ২০ টাকা বেশি।’

মিরপুর থেকে বাংলামোটর এসেছেন রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় কোথাও যানজট ছিল না, তবে যাত্রীর জন্য বাস সব স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিল।’

ভাড়া বেশি নিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১০ টাকা বেশি চাইছিল, পরে ৫ টাকা বাড়তি দিয়েছি।’

ভাড়া অতিরিক্ত নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওয়েলকাম পরিবহনের চালকের সহকারী মিজান বলেন, ‘রাস্তায় যাত্রী নেই। আমরা পেট বাঁচাতে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। একটা গাড়ি বের করলে পার ডে (প্রতি দিন) কতগুলো টাকা খরচ আছে। সেই খরচ তুলে তারপর তো আমাদের হাজিরা তুলতে হবে। তা না হলে আমরা খাবো কী?’

ঈদের দ্বিতীয় দিন ঢাকায় যান চলাচল বেড়েছে, নেই চিরচেনা যানজট

তিনি বলেন, ‘ফাঁকা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে। যাত্রী পাচ্ছি না। আর কারও কাছ থেকে জোর করেও অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছি না। ঈদ বকশিশ হিসেবে যে যা দিচ্ছে তাই নিচ্ছি।’

গাবতলী লিঙ্ক পরিবহনের চালকের সহকারী বলেন, ‘ভাই রাস্তায় যাত্রীর কী অবস্থা দেখছেন তো। গাড়ি পুরা ফাঁকা। আপনারা ২/৪ টাকা না দিলে বৌ-পোলাপান নিয়ে কী খাবো? আমাদের টাকা থাকলে তো আর গাড়ি নিয়ে বের হতাম না। দিন শেষে খাওয়ার চিন্তা করেই তো গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘রাস্তায় গাড়িও তেমন নেই। কারণ যাত্রী নেই। কোনো কোম্পানির বাস সব বের হয়নি। হাতে গোনা কয়েকটা করে গাড়ি বের করেছেন মালিকরা।’

জা ই/এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *