ভোর ৫:০৪ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ আগস্ট ২০২৪

 

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির বেশির ভাগ শেয়ার এস আলম গ্রুপের হাতে থাকায় আপাতত ব্যাংকটিতে স্বতন্ত্র পরিচালক দেওয়া হবে। তারাই ব্যাংকটি পরিচালনা করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার এ সিদ্ধান্ত ব্যাংকটিকে জানায় বলে জানা গেছে। জানা গেছে, এরই মধ্যে শেযারবাজার বিশেষজ্ঞ ও ঢাবির সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবু আহমদকে ব্যাংটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দেননি, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। টাকা উদ্ধারে আইনগত যত পন্থা আছে, সবই অনুসরণ করা হবে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে। ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্য ব্যাংকগুলো নিয়েও একই সিদ্ধান্ত হবে।

যেসব ব্যাংকে পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে, সেসব ব্যাংক কারা চালাবে, এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, সরকার কোনো ব্যাংকের দায়িত্ব নেবে না। আপাতত স্বতন্ত্র পরিচালক দিয়ে ব্যাংকগুলো চলবে। এস আলম গ্রুপ ছাড়া অন্যদের হাতে ২ শতাংশের বেশি শেয়ার থাকলে পরে তাঁরা পর্ষদে আসতে পারবেন।

এস আলম গ্রুপের কাছে কত ঋণ আছে, জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, নামে-বেনামে কত ঋণ আছে, তা জানা যায়নি। বেনামি ঋণের তথ্য এখনো আমাদের কাছে নেই। তবে এসব তথ্য বের হবে। এ জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ অনিয়মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দায় নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। এর জবাবে গভর্নর বলেন, এটা আমার আসার আগের ঘটনা। আগামী দিনে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক, আমি চাই না। কারও যদি কোনো কথা থাকে, তাহলে আমার দরজা খোলা আছে। আমি শুনে যদি যৌক্তিক দাবি মনে হয়, তাহলে তা মানার চেষ্টা করব। কিন্তু অযৌক্তিক কোনো দাবি মানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দরকার হলে আমাকে পদত্যাগ করতে হবে। কিন্তু অযৌক্তিক দাবি মেনে কিছুতে স্বাক্ষর করব, সেটা আমার দ্বারা হবে না। ওই সাইনের সঙ্গে আমার পদত্যাগপত্রও একসঙ্গে যাবে।

বিভিন্ন ব্যাংকের আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে কবে নাগাদ ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, এটা এক দিনের ব্যাপার নয়। আমি এসেই বড় রকমের নাড়াচাড়া দিতেও চাই না। কারণ, আমাদের হাতে অনেক কাজ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আমাদের এখন প্রধান কাজ হচ্ছে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করা। বাংলাদেশ যেন খেলাপি না হয়, সে জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে যাতে প্রশ্ন না ওঠে, আমরা যেন অবনমিত না হই, সহযোগী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যেন আমরা সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে পারি, এসব নিয়ে কাজ করতে হবে।

 

২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির মালিকানা নেওয়ার পর থেকে নামে-বেনামে অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক এই গোষ্ঠী। এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্টদের হাতে ব্যাংকটির শেয়ারের ৮২ শতাংশের মালিকানা রয়েছে জানিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে এস আলমের শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

 

টিআই/ এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *