ইবি প্রতিনিধি
০২ অক্টোবর ২০২৪
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন দুই ছাত্রলীগ নেতা। বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে ইবি থানায় হস্তান্তর করেন।
তোপের মুখে পড়া ওই দুজন হলেন শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সম্পাদক শাহীনুর পাশা এবং নাট্য ও বিতর্কবিষয়ক সম্পাদক আল আমীন সুইট। তারা দুজনই আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের তৃতীয় বর্ষের স্থগিত হওয়া সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা বিভাগের সভাপতিকে না জানিয়ে পরীক্ষা দিতে আসলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের উদ্রেক হয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ভবনের নিচে ছাত্রলীগবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বিভাগের শিক্ষকরা পরিস্থিতি বুঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে তাদের ক্যাম্পাস থেকে বের করার উদ্যোগ নেন। এ সময় উপস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন ওই দুই ছাত্রলীগের নেতা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, বিভাগের শিক্ষক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়ে তাদের নিরাপত্তা দিয়ে থানায় সোপর্দ করেন।
এ বিষয়ে তোপের মুখে পড়া ওই ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ‘আজ সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা ছিল। এটা দিতে না পারলে খুব ক্ষতি হতো আমাদের। পরীক্ষার শুরুতে আমরা বন্ধুদের কাছে আগের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিছি। পরীক্ষা ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে আমাদের ভুল হয়েছে বিভাগের শিক্ষকদের অবগত না করেই চলে এসেছি।’
শিক্ষকদের না জানানোর কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আমরা ভাবছিলাম চুপিসারে এসে পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে যাবো। তবে জানানো উচিত ছিল তাদের। তাদের সহযোগিতায় কোনও ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া আমাদের নিরাপদে থানায় রাখা হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের ওপর যাতে মব জাস্টিস না হয় সেটাকে গুরুত্ব দিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মিলে আমরা তাদের নিরাপদে থানায় সোপর্দ করেছি।’
এদিকে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ও ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা দুই ছাত্রলীগ নেতাকে আমাদের কাছে নিরাপদে সোপর্দ করেছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের অভিযোগ আছে কি না সেগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’
টিআই / এনজি