নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ এপ্রিল ২০২৫
বাংলাদেশে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা চরমে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। এ ধরনের ভাঙচুর-লুটপাট দেশের বদনাম হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, সরকারের উচিত ছিল আগে থেকে সতর্কতা নিশ্চিত করা। এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু সরকার সেটি করেনি। আমরা বলতে চাই, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা এখানে লক্ষণীয়। সরকার সতর্ক থাকলে দেশের নামে এমন বদনাম আমাদের হতো না। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ছাত্রদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল দাবি করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত সব দেশে যাত্রা’ লেখা থাকলেও, সেই নির্দেশনা বাদ দেওয়া হয়েছিল। এর মানে বিগত সরকার ইসরায়েলকে পরোক্ষভাবে স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিল। অথচ তারাই বাংলাদেশের মুসলমানদের পক্ষে, বিশ্ব মুসলমানদের পক্ষে মায়াকান্না করতো।
অবিলম্বে ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, যেসব বৃহৎ শক্তিগুলো ইসরায়েলের পক্ষে ভূমিকা রাখছে, তাদের থামাতে মুসলিম বিশ্বের মোড়লদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। তারা যেন বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত মুসিলমদের পক্ষে নিজেদের কণ্ঠ জোরালো করেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন সারা বিশ্বের মানুষ গণহত্যার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। বাংলাদেশের মানুষও একযোগে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে। যারা গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলছে না, তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার দোসরদের সহায়তা করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে বিএনপি খুব শিগগিরই কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা করবে। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতিসংঘের ভূমিকাও এ ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ। ইসরাইল কখনোই জাতিসংঘের কোনো প্রস্তাব বা সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখায়নি। এটি আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের চরম অবমূল্যায়ন।
সমাবেশে বিএনপির নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, ফিলিস্তিনের শান্তিকামী জনগণ তাদের মাতৃভূমি রক্ষার আন্দোলন করে আসছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু। এমন নির্মম গণহত্যার পরও যেসব রাষ্ট্রপ্রধান চুপ থাকছেন, তাদের আমরা ধিক্কার জানাই।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা ছাত্রদল ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো দেশগুলোর জনগণ যেভাবে নিষ্ঠুরতার প্রতিবাদে ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের প্রতি ছাত্রদলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও সমর্থন জানাই।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন। এতে বিএনপি ও ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
জা ই / এনজি