আরাফাত জোবায়ের, প্যারিস থেকে

স্তাদে দ্য ফ্রান্সে চলছে পোল ভোল্ট, হার্ডেলসের মতো নানা আকর্ষণীয় ইভেন্ট। কিন্তু ১০০ মিটার স্প্রিন্টের হিট শেষ হতেই বাংলাদেশের সাংবাদিকরা ছুটলেন মিক্সড জোনের দিকে। এর আগেই বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান হিটেই বিদায় নিয়েছেন। তার অলিম্পিক অভিজ্ঞতা ও পারফরম্যান্সের প্রতিক্রিয়া জানতে মিক্সড জোনে ছোটেন সাংবাদিকরা।
বাংলাদেশের দ্রুততম মানব অলিম্পিক খেলার জন্য ফিট ছিলেন না। গত কয়েক মাস তিনি পূর্ণাঙ্গ অনুশীলনও করতে পারেননি। তার কোচও নাকি তাকে খেলতে বারণ করেছিলেন। পেটের নিচের অংশে সমস্যা রয়েছে। হার্নিয়ার একটি অপারেশনও করা প্রয়োজন।
আজ (শনিবার) অলিম্পিক অংশগ্রহণ শেষে এমন তথ্য জানা গেছে। অথচ গত কয়েক মাস ধরেই ফেডারেশন ও ইমরান দুই পক্ষই অলিম্পিকে সেরা টাইমিং ও ভালো কিছুর প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আসছিলেন। তাই আজ মিক্সড জোনে সাংবাদিকরা রীতিমতো হতভম্ব।
বাংলাদেশের ক্রীড়া কর্মকর্তাদের তথ্য গোপন ও অসত্য প্রকাশ, দেশীয় ক্রীড়াবিদদের ইনজুরি এবং রেকর্ড নিয়ে তথ্য বিভ্রাটের সঙ্গে সাংবাদিকরা অনেকটাই অভ্যস্ত। ইমরান ইংল্যান্ডে বেড়ে উঠেছেন। গত তিন বছরে বাংলাদেশের অ্যাথলেটিক্সের আলোকবর্তিকা তার হাতেই। তাই ইমরানের মতো ক্রীড়াবিদের কাছে এটা প্রত্যাশিত ও কাম্য নয়। তাই সাংবাদিকরা আরও খটকায়। তার নৈতিকতা এবং সততা নিয়েও প্রশ্ন হয়েছে মিক্সড জোনে। তখন শোনা গেল, তিনি নাকি ফেডারেশনকেও জানিয়েছেন এবং ফেডারেশনের শেখানো বুলিই তিনি আওড়িয়েছেন। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় দুই পক্ষের মন্তব্যই তুলে ধরা দায়িত্ব। তাই ফেডারেশনের ভাষ্যও জানা প্রয়োজন সাংবাদিকদের।
কয়েক মিনিট পর পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হলে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টুকে ইমরানের বিষয় জিজ্ঞাসা করা হয়। ইমরানের অসুস্থতা, আনফিট, খেলতে না চাওয়া– এসব বিষয় উড়িয়ে তিনি বলেন, ‘সে অসুস্থ বা আনফিট হলে তাকে আমরা পাঠিয়েছি কেন? আনফিট হলে অন্য কাউকে পাঠাতাম। এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই, সে আমাদের জানায়নি। আপনাদের কি বলেছে এটা আমি জানি না।’
দুই রকম মন্তব্যে একটা দ্বান্দ্বিক অবস্থা তৈরি হয়েছে। অলিম্পিকের মতো আসরে এসে অন্য দেশ যখন পদক ও রেকর্ড নিয়ে হিসাব করে, তখন বাংলাদেশের সাংবাদিকদের অলিম্পিকে এসেও পাল্টাপাল্টি বক্তব্য নিয়ে খবর লিখতে হয়। যা দেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য চরম হতাশার!
এজেড/ এনজি