রাত ১০:৪৭ | শনিবার | ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

আর্জেন্টিনার সঙ্গে তো মেক্সিকোর তুলনাই চলে না: মেসি

স্পোর্টস প্রতিবেদক
১৯ এপ্রিল ২০২৫

ফুটবল মাঠে পারস্পরিক লড়াইয়ে আর্জেন্টিনার চেয়ে জোযন জোযন দুরে মেক্সিকো ফুটবল দল। কিন্তু মেক্সিকান ফুটবল সমর্থকরা আর্জেন্টিনাকে মনে করে তাদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মধ্যে যেমন সেয়ানে সেয়ানে লড়াই, মেক্সিকানরা মনে করে তাদের সঙ্গে আর্জেন্টিনারও সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। যে কারণে, তারা মেসিকেও মনে করে তাদের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। শুধু তাই নয়, একই কারণে মেসিকে নিয়ে তারা নানা আপত্তিকর মন্তব্যও করে থাকে।

এ বিষয়টাই ক্ষেপিয়ে তুলেছে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকাকে। আগের চেয়ে দ্বিগুন ক্ষোভের সঙ্গে মেক্সিকান ফুটবল সমর্থকদের মানসিকতার জবাব দিয়েছেন তিনি। মেক্সিকো ফুটবল সমর্থকদের নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিলেন লিওনেল মেসি।

সিম্পলি ফুটবলের সঙ্গে এক ইউটিউব সাক্ষাৎকারে মেক্সিকোর সঙ্গে আর্জেন্টিনার রাইভালরি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা (মেক্সিকো ফুটবল সমর্থকরা) নিজেদেরকে এমন এক অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে, যেখানে মনে হবে আমাদের সাথে তাদের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। অথচ তার কোনও ভিত্তি বা অস্তিত্বই নেই। আর্জেন্টিনা এবং মেক্সিকোর মধ্যে তো কোন তুলনাই চলে না। আমি বুঝি না এই আজব জিনিসটা কোথা থেকে এলো!’

তবে মাঠের ফলাফল যাই হোক, বিশ্বকাপের মাঠে কিন্তু আলবিসেলেস্তে এবং এল ট্রাইয়ের মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বীতা বেশ জমে ওঠে। অনেকেই বলে আর্জেন্টিনা বনাম মেক্সিকো ক্ল্যাসিক লড়াই। যার শেষটি ছিল, ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে। ওই ম্যাচে আর্জেন্টিনা জিতেছিলো ২-০ গোলে। ওই ম্যাচের পর থেকেই মেক্সিকান সমর্থকদের ক্রোদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন মেসি। অথচ, বিশ্বে অন্য প্রদ্বিন্দ্বীদের কাছেও তিনি সমাদৃত।

এর মূলে কী কারণ? জানতে চাইলে মেসি বলেন, ‘আমি আসলে জানি না, আমাকে নিয়ে মেক্সিকানদের কী হয়েছিল। (কাতার বিশ্বকাপে) যখন সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিলো, সেই থেকে তাদের রাগও শুরু হয়েছিল। অথচ আমি সবসময় মেক্সিকোর মানুষের কাছ থেকে খুব ভালোবাসা অনুভব করেছি; আমি কখনও কাউকে অসম্মান করিনি।’

আর্জেন্টিনার রোজারিওয় জন্ম নেয়া এই বিশ্বজয়ী ফুটবলার মেক্সিকোর বিপক্ষে এখনও পর্যন্ত মোট চারটি গোল করেছেন। যার শেষটি করেন তিনি কাতার বিশ্বকাপে। এছাড়া মেসি খেলেছেন এমন কোনো ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে হারেনি আর্জেন্টিনা।

Messi

কাতার বিশ্বকাপে মেক্সিকোর বিপক্ষে গোলের পর মেসির সেই বুনো উল্লাস

তবে এই সাক্ষাৎকারে মেসি জানিয়েছেন, মেক্সিকোর বিপক্ষে ওই গোলটা করার পর সবচেয়ে বেশি আনন্দ উদযাপন করেছিলেন তিনি। কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হারের পর তুমুল চাপে পড়ে গিয়েছিলে আর্জেন্টিনা। এ কারণেই মূলত মেক্সিকোর বিপক্ষে মেসির গোলে আনন্দ উদযাপনের মাত্রাটাও ছিল সবচেয়ে বেশি।

মেসি দিয়েছেন সে তথ্য। তিনি বলেন, ‘আসলে, ভক্তদের কারণে নয়, বরং তা তো অনেক দূরের ব্যাপার। এটা (ওই গোলটা) ছিল এক বিরাট স্বস্তি এবং এটা আমাদেরকে বিশাল এক মানসিক প্রশান্তি দিয়েছে। মূলত আমরা কী ধরনের দল এই গোলটা দিয়ে আমরা সেটা যেন ফিরে পেলাম এবং নিজেদের ওপর বিশ্বাসও ফিরে পেয়েছি।’

তবে মাঠের বাইরে আন্দ্রেস গুয়ার্দাদোর সঙ্গে জার্সি বদলের ঘটনায় বিতর্কের জন্ম দেন মেসি। তিনি ড্রেসিংরুমে নিজের লকারের সামনের ফ্লোরে গুয়ার্দাদোর জার্সি ফেলে চলে যান। এ ঘটনায় তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। মেক্সিকান অনেকবারের বক্সিং চ্যাম্পিয়ন সাউল ক্যান্সেলো আলভারেজ এ ঘটনাকে মেসি কর্তৃক মেক্সিকো দেশ এবং মেক্সিকান জাতিকে অপমান করার সামিল বলে বর্ণনা করেন।

messi

যদিও পরে এ ঘটনার একটা ব্যাখ্যা মেসি এবং আর্জেন্টিনা দলের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, ঘটনাটা অনিচ্ছাকৃত ভুলের কারণে হয়েছে। পরে সাউল ক্যান্সেলো আলভারেজ ভুল বোঝার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন; কিন্তু মেক্সিকান ফুটবল সমর্থকরা এ ঘটনা ভুলতে পারেনি। এ বছরের শুরুতে লাস ভেগাসে ক্লাব আমেরিকা অব মেক্সিকোর সঙ্গে ইন্টার মিয়ামির ম্যাচ চলাকালে মেক্সিকান সমর্থকরা মেসিকে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করে।

ইন্টার মিয়ামি অধিনায়ক ওই ম্যাচে একটি গোল করেন এবং আগুইলাস ভক্তদের সামনে তিন আঙ্গুল উঁচিয়ে ধরে গোল উদযাপন করেন। তিন আঙ্গুলের অর্থ হলো আর্জেন্টিার তিনটি বিশ্বকাপ জয়।

 

জ উ / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *