নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’। যীশু খ্রিস্টের শুভ জন্মদিনকে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করে থাকে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীরা। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা বড় দিন উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন।
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আনন্দ-উৎসব এবং নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করবে বাংলাদেশে বসবাসকারী খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারিরা। বড়দিন উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃংখলা রক্ষাবাহিনীর পক্ষ থেকেও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বড়দিনকে ঘিরে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে উৎসব। দেশের সব গীর্জা ও বড় বড় হোটেল রঙ্গিন বাতি আর ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে বড়দিনের বিশেষ সাজে। দিনটি উপলক্ষে খ্রীস্টান পরিবারে কেক তৈরি হবে, থাকে বিশেষ খাবারের আয়োজন। দেশের অনেক অঞ্চলে কীর্তনের পাশাপাশি ধর্মীয় গানের আসর বসবে। খ্রিস্টধর্মে বিশ্বাসীদের অনেকের ঘরেই বসানো হয়েছে প্রতীকী গোশালা। বেথেলহেমের গরীব কাঠুরের গোয়াল ঘরেই যীশু খ্রিস্টের জন্ম। সে কথা স্মরণ করে বাড়িতে ধর্মীয় আবহ সৃষ্টি করতেই এটি করেন যীশুর অনুসারীরা।
এই ঐতিহাসিক দিনে আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত নবী ও রাসূল হযরত ঈসা (আঃ) ফিলিস্তিনের বিখ্যাত জেরুসালেম নগরীর কাছে বেথেলহেম পল্লীতে হযরত মরিয়ম (আঃ)-এর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তারা খৃস্ট জগতে যথাক্রমে ‘যীশুখৃস্ট’ ও ‘মাদাম মেরি’ হিসেবে পরিচিত। বিশ্বজাহানের একচ্ছত্র অধিপতি আল্লাহ শানে যাল্লাযালালুহু ঈসা (আঃ)কে এই ধরায় পাঠিয়েছিলেন মানবজাতিকে নাস্তিক্য তথা কুফর ও শিরক এবং সর্বপ্রকার জুলুম, অনাচার, পাপ ও মিথ্যাচার থেকে ফিরিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনার উদ্দেশ্যে। কিন্তু হক ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতায় অন্যান্য নবীর মতো হযরত ঈসা (আঃ)কেও ইহুদীসহ বেদ্বীনী শক্তির বাধা ও চক্রান্তের সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
খ্রীস্টানদের বিশ্বাস, ঈশ্বর (আল্লাহ) তার পরিকল্পনা অনুসারে একমাত্র পুত্রকে এই দিনে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, যিনি পাপী মানুষকে পাপ থেকে উদ্ধারের জন্য মানবশিশু হিসেবে প্রেরিত হন। এই শিশু ‘যীশুর’ জন্ম ও কর্ম পাপী মানুষ ও ঈশ্বরের মধ্যে পুনর্মিলনের ব্যবস্থা করেছে। যারা যীশুকে বিশ্বের ত্রাণকর্তারূপে স্বীকার করেন তারাই খৃস্টান নামে অভিহিত।
বড়দিন উপলক্ষে কাল বুধবার সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি রেডিও এবং টিভি চ্যানেলসমূহ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
এদিকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের উৎসব বড়দিন উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বিগত বড়দিনের উৎসবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ডিএমপি যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও বড়দিনের সুসংহত নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রত্যেক গির্জায় স্থায়ীভাবে পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি পুলিশী টহল বাড়ানোসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন ও গোয়েন্দা কার্যক্রম নেয়া হয়েছে।
জা ই / এনজি