সকাল ১০:০৬ | রবিবার | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

অন্তর্বর্তী সরকারের অনেকগুলো নিয়োগ ইতিমধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে —-কর্ণেল অলি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ সেপ্টম্বর ২০২৪

 

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড গুলো স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে দ্রুতবেগে বাস্তবায়ন করা না হলে সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। অনেকগুলো নিয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে অলি আহমদ এ দাবি করেন।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার চরম আত্মত্যাগের বিনিময়ে দুর্নীতিবাজ, স্বৈরাচারী, অর্থ পাচার ও লুণ্ঠনকারী এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় হয়েছে। এই অসীম আত্মত্যাগকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে পারি না।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে অলি আহমদ আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে অধিকতর সতর্কতার সঙ্গে মনোনয়ন বা নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। উপদেষ্টা এবং নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অতীত ইতিহাস জানা না থাকলে বা রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাব থাকলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাতে ছাত্র-জনতার রক্ত বৃথা যাবে।

এর আগে এলডিপির দুই দফার সাংবাদিক সম্মেলন ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, আমরা এলডিপির পক্ষ থেকে বৈঠকে মোট ৮৩টি প্রস্তাব উত্থাপন করি, যা আমাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য নয়, বরং দেশের সার্বিক মঙ্গলের জন্য। দুঃখজনক হলেও সত্য, সংস্কার বাস্তবায়নের গতি হতাশাব্যঞ্জক।

অলি আহমদ আরও বলেন, জনগণের মতামতের ওপর ভিত্তি করে সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব। জাদুঘর করা অবশ্যই প্রয়োজন, প্রশ্ন হলো গণভবনে কেন? অন্য জায়গায় নয় কেন?’ তিনি বলেন, জাতীয় প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করার আইনগত ভিত্তি এখন কোথা থেকে পেলেন? ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের ওপর অন্য কিছুই অধিকতর গুরুত্ব পেতে পারে না। আন্দোলনকারী আমাদের ছেলেমেয়েদের বা জনতার সরলতাকে পুঁজি করে কোনো অন্যায় পদক্ষেপ নেওয়াও ঠিক হবে না।

অলি আহমদ বলেন, এ দেশে একনায়কত্ব, স্বৈরশাসন কায়েমকারী, গণহত্যাকারী, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী, টাকা লুণ্ঠনকারী, চাঁদাবাজ এবং জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নাই। এ দেশ এখন কারও বাপের সম্পত্তি না। যত দ্রুত সম্ভব আইনশৃঙ্খলার উন্নতি সাধন করতে হবে। এলডিপির সভাপতি উল্লেখ করেন, নিত্যপণ্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। অসংখ্য আহত ছাত্র-জনতা হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। এরই মধ্যে বন্যায় কয়েকটি জেলা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বারবার ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ উজানের দেশের বৈরিতার শিকার হচ্ছে। শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ও লোটা বহনকারী অনেক ব্যক্তি এখনো প্রশাসনে ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
রাষ্ট্রপতির দিকে ইঙ্গিত করে অলি আহমদ বলেন, দুর্নীতিবাজ একজন ব্যক্তি এখন পর্যন্ত দেশের এক নম্বর আসনে বসে আছেন। এর কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। সংবিধানের দোহাই দিয়ে, যারা তাকে এই আসনে বসিয়ে রেখেছে, তারা পক্ষান্তরে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সঠিক মূল্যায়ন করছে না।

অলি আহমদ বলেন, শেখ হাসিনা সরকার অবৈধ ক্ষমতা কুক্ষিগত করার স্বার্থে দেশকে ভারতের কাছে নতজানু করে ফেলেছে। আমরা ইচ্ছা করলেও প্রতিবেশী বদলাতে পারব না। সুতরাং উভয় দেশের সুসম্পর্কের স্বার্থে অনতিবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার, আওরঙ্গজেব বেলাল, খাইরুল কবির পাঠান, হামিদুর রহমান খান প্রমুখ।

 

জা ই / এনজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *